হালকাপাতলা ছিপছিপে তুনাকে দেখে বুয়েট পাস মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মনেই হয় না। তার সঙ্গে ইদানীং যোগ হয়েছে একটা জার্মান এমএস। আমার জবাবের অপেক্ষা না করেই পিএইচডি পাস ফ্রাউ ডক্টর মৌরি আপু যোগ করল, ‘ওর আসলে “দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া” অবস্থা। যে দেশে বাস, সেটাই দেখা হয়নি।’ ব্যাপারটা সলজ্জে মাথা নেড়ে স্বীকার করতেই হলো। কড়ে গুনলে প্রায় বছর আষ্টেক আছি এই প্রবাসে। কিন্তু জার্মানি বলতে ওই মিউনিখই বুঝি। কুয়ার ব্যাঙ যাকে বলে। তবে ব্যাঙটা আজ এই বিদ্যাবতী বিদুষীদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে মানুষ হওয়ার একটা ট্রাই মেরে দেখবে।
২.
গল্পে-আড্ডায় সময় কর্পূরের মতো উধাও। মাঠ-ঘাট, পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পাতার ফাঁকে নীল জল ঝিলিক দিয়ে উঁকি দিল। ট্রেন এসে থামল টেগের্নসি স্টেশনে। নামের সঙ্গে ‘সি’ থাকা মানেই এখানে একটা লেক আছে। ‘ইংরেজিতে যাহাই লেক, জার্মানে তাহাই “সি”’। সমতল থেকে প্রায় সাড়ে ৭০০ মিটার উঁচুতে বাভারিয়ান আলপস ঘেরা টেগের্নসি নাকি জার্মানির টপ টেন লিস্টে থাকা লেক। আজ তাহলে সৌন্দর্য পরীক্ষা হয়ে যাক। সত্য হলে ‘আরে ওয়াহ্, ওয়াহ্’ বলে খৈয়াম কিংবা গালিবের রোমান্টিক দু-একটা শের-শায়েরি ঝেড়ে দেব। আর মিথ্যে হলে লেক পাড়ের কোনো গাছের ডাল ভেঙে রেখে যাব। বহুত খতরনাক লোক আমরা।