মণিরামপুর হাসপাতালের উপর মানুষের আস্থা ফেরাতে ডা. তন্ময় বিশ্বাস এর অভিনব কৌশল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২২ ১৭:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২২ ১৭:৪০

ছবি সমসাময়িক
মণিরামপুর প্রতিনিধি।। হাসপাতালে এসে সন্তান প্রসব করলে নবজাতক পাচ্ছে নতুন পোষাক আর মা পাচ্ছেন ফুলের তোড়া। সেটা নরমাল ডেলিভারি হোক বা অস্ত্রপ্রচারের (সিজারিয়ান) মাধ্যমে হোক। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর হাসপাতালে বেডে আনলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন। ক্লিনিক ছেড়ে গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালমুখী করতে অভিনব এ কৌশলটি প্রয়োগ করছেন মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস। নিজ খরচে তিনি এ উদ্যোগটি হাতে নিয়েছেন। এতে খুশিও হচ্ছেন নবজাতকের স্বজনরা। ডা. তন্ময় টিএইচএ হিসেবে মণিরামপুর হাসপাতালে যোগ দেন গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। এরপর হাসপাতালে জন্ম নেয়া ১৪ জন নবজাতক ও তাদের মাদের শুভেচ্ছা উপহার দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ এ উপহার পেয়েছেন বিজয়রামপুর গ্রামের শামীমা খাতুন। মণিরামপুর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে ভর্তি আছেন তিনি। শামীমা খাতুন বলেন, গত ১৩ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ১৫ তারিখ সিজারের মাধ্যমে আমার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আমি তৃতীয় বারের মতো মা হয়েছি। এরপর ডাক্তাররা এসে বাচ্চার জন্য নতুন পোশাক দেছেন। আমারে একতোড়া ফুল দেছে। উপহার পেয়ে আমি খুশি। মণিরামপুর হাসপাতালে গাইনী ও এনেস্থিসিয়া (অজ্ঞান) চিকিৎসক নেই কয়েক বছর। চিকিৎসকের অভাবে করোনাকালীন এ হাসপাতালে মাসে একটা বা দুটো সিজার হয়েছে। কমাস আগে এখানে একজন এনেস্থিসিয়া (অজ্ঞান) চিকিৎসক যোগ দিলেও গাইনী চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে। কেশবপুর হাসপাতাল থেকে গাইনী চিকিৎসক আয়েশা আক্তার প্রেষণে এসে সপ্তাহে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার মণিরামপুর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। রোগী থাকলে সপ্তাহে তিন দিন সিজার হয় এ হাসপাতালে। মণিরামপুর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সেবিকা বন্দনা নন্দী বলেন, অনেক বছর ধরে মণিরামপুর হাসপাতালে সিজার হয়। কিন্তু নবজাতক জন্ম নিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও শিশুকে উপহার দিতে আগে কখনো দেখিনি। তন্ময় স্যার এটা চালু করেছেন। উদ্যোগটি খুবই ভাল। এতে হাসপাতালের প্রতি রোগীদের আগ্রহ বাড়বে। ডা. তন্ময় বিশ্বাস বলেন, আমি মণিরামপুরে টিএইচএ হিসেবে যোগ দেয়ার পর অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে ৬ জন ও স্বাভাবিকভাবে ৮ জন গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসব করেছেন। হাসপাতালে জন্ম নেয়া প্রত্যেক নবজাতক এবং মাকে আমি নিজস্ব উদ্যোগে উপহার দিচ্ছি। আমার উদ্দেশ্য হলো প্রসূতি মায়েদের হাসপাতালে ডেলিভারিতে উৎসাহিত করা এবং মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো। তিনি বলেন, মণিরামপুরে থাকা অবস্থায় আমি এ উপহার দেয়ার কাজ অব্যাহত রাখবো।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: