
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো হাড়, অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে জটিলতা তৈরি করতে পারে। এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
ফ্রোজেন শোল্ডার
সাধারণত চল্লিশ বছরের বেশি বয়সী ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। তা ছাড়া হৃদ্রোগ, হাইপোথাইরোডিজম, স্ট্রোক, ভারী কাজ করা, কাঁধের আঘাত—এসব কারণে ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। কাঁধের জয়েন্টের ক্যাপসুলে প্রদাহের কারণে তা স্ফীত বা শুকিয়ে যায়। ফলে নড়াচড়া কমে যায় এবং আশপাশের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। চুল আঁচড়াতে, জামাকাপড় পরতে, দৈনন্দিন কাজে হাত নাড়াচাড়ায় এক বা উভয় কাঁধে ব্যথা হয়।
সারকোট জয়েন্ট
ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথিক কারণে পায়ের গোড়ালি ও পাতার হাড়, জয়েন্ট ও নরম টিস্যুগুলোর ক্রমান্বয়ে ক্ষতি হয়। ব্যথা, পা ফোলা, লালচে ভাব, গরম হয়ে যাওয়া, পায়ের আকৃতির পরিবর্তন প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস
বয়সের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের হাঁটুর লিগামেন্ট, মিনিস্কাস ও হাড়ের প্রদাহজনিত পরিবর্তনের ফলে হাঁটুতে ব্যথার সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত ওজন,আঘাত ও হরমোনজনিত সমস্যা এর ঝুঁকি আরও বাড়ায়।
ডায়াবেটিক চিরোআর্থ্রোপ্যাথি
প্রায় ৩০ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি পরিলক্ষিত হয়। সূক্ষ্ম রক্তনালি সংকোচনের কারণে ত্বকে বারবার প্রদাহ সৃষ্টি হয়, ফলে ত্বক পুরু হয়ে যায়। অস্থিসন্ধির আশপাশের এই পুরু চামড়া ব্যথাবিহীন জয়েন্ট স্টিফনেস তৈরি করে। সাধারণত হাত ও পায়ের আঙুলে এটি বেশি দেখা দেয়। আঙুল সোজা করা বা নড়াচড়ায় সমস্যা হয়।
কারপাল টানেল সিনড্রোম
সাধারণত বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা ও অনামিকার অর্ধেক অংশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, অসাড় ভাব বা ঝিনঝিন করা এই রোগের লক্ষণ। ডায়াবেটিসের পাশাপাশি হাইপোথাইরোডিজম, গর্ভাবস্থা, রোগীর পারিবারিক ইতিহাস এর ঝুঁকি বাড়ায়।
গেঁটে বাত
রক্তে উচ্চমাত্রার ইউরিক অ্যাসিডের কারণে সৃষ্ট তীব্র ব্যথাযুক্ত অস্থিসন্ধির প্রদাহজনিত রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে যে গাউট ও ডায়াবেটিসের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। গাউট রোগীদের প্রায় ২৬ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: