হরতাল চলাকালে পল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ: ২০জন আটক, কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২২ ১০:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২২ ১০:৪৩

ছবি সমসাময়িক
জেমস রহিম রানা: সারাদেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট (এলডিএ) এর ডাকা আধাবেলা হরতালে রাজধানীর পল্টন মোড়ে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের অর্ধদিবস হরতাল চলাকালে রাজধানীর পল্টনে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে হরতালের সমর্থক বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া হরতাল পালন শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। সোমবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরতাল সমর্থনকারী নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরাতে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এ সময় পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন নেতাকর্মীরা। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিনা উসকানিতে নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তার প্রতিবাদে দেশব্যাপী সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভ হবে। চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এই অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হয়। এর আগে গত ১১ মার্চ সকালে পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। হরতালের সমর্থনে রাজধানীর পল্টনে ভোর ৬টার দিকে মিছিল বের করেন সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা। তারা পল্টন মোড়ে অবস্থান নেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে হেঁটে ও রিকশায় গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন অফিসগামী মানুষ। এদিকে, নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ সময় হরতাল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে পুলিশকে জলকামান ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। এসময় হরতাল সমর্থকরাও পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এর আগে সকাল থেকেই পল্টন মোড় অবরোধ করে রাখেন হরতাল সমর্থকরা। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করছিলাম। পুলিশ বিনা উসকানিতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। জলকামান ও টিয়ার শেল ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশের হামলায় আমাদের বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আজকের এ জঘন্য পুলিশি হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ডাকা হয়েছে। এর আগে, সাইফুল হক বলেন, গতকাল রাত থেকেই বাম নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে। দেশের ১৪-১৫টি জেলা থেকে খবর পেয়েছি, ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক ও তুলে নেওয়া হয়েছে। আজ সকালেও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হরতাল সমর্থনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। গণসংহতির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সকালে মিরপুর হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করলে পুলিশ আমাদের ৯ নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। তাদের এখনো ছাড়া হয়নি। একইসঙ্গে সারাদেশেও বেশকিছু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট হরতাল ডাকে। এর সমর্থনে ভোর থেকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দল সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা পল্টন মোড়ে মিছিল করেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: