পটিয়ায় পাড়ায় মহল্লায় জমে উঠেছে কোরবানি পশু'র বাজার

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতা।। | প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২২ ০৮:০০

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতা।।
প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২২ ০৮:০০

ফাইল ফটো

 পটিয়ায় পাড়ায় মহল্লায় জমে উঠেছে কোরবানি পশুর বাজার। পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিভিন্ন অলিগলিতে কোরবানি পশু বাজার জমজমাট হলেও ক্রেতা সংখ্যা কম দেখা যায়। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত পশু মওজুত করেছেন। প্রায় প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় ছোট ছোট তাঁবু খাটিয়ে পশু জড়ো করা হচ্ছে। ফলে কোরবানিতে পশুর সংকট থাকবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পর্যাপ্ত পশু দেশে থাকায় দামও ক্রেতাদের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। গত সোমবার পটিয়া পৌরসভার নতুন থানার হাট ও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পশু‘র হাতে তেমন গরু, মহিষ ও ছাগলের বাজার জমে উঠেনি। তবে আগামী শুক্রবার জমজমাট পশু‘র বাজার বসবেন বলে ইজারাদারা জানান। তবে উপজেলার সবচেয়ে বড় ২৫মন ওজনের গরুটি মালিক নাইখাইন গ্রামের হাসান মেম্বার নামে এক খামারী তার খামারে বড় গরুটি দাম হাকিয়েছে ২৫লাখ টাকা।জানাযায়, ভারত, মিয়ানমার এবং দেশে উত্তর বঙ্গ রাজশাহী, বগুড়া, কুষ্টিয়া, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের করিডোর দিয়ে প্রতিদিন ঢুকছে কোরবানির পশু। তবে দেশের অভ্যন্তরেও খামারিরা কোরবানির জন্য পশু পালন করেছেন। পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে ট্রাকে ট্রাকে করে আসতে শুরু করেছে কোরবানি দেয়ার উপযোগী বিভিন্ন সাইজের গরু। স্থানীয় মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীরা এসব গরু নিয়ে আসছেন বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করে।হাইদগাঁও এলাকার গরু ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দিন, গফুর মেম্বার জানান, তারা প্রতিবছর দেশের উত্তর বঙ্গ এলাকা থেকে গরু ক্রয় করে পটিয়া নিয়ে আসেন। পরে অল্প লাভে তার বিভিন্ন ছোট ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে দেন। আমাদের প্রতিটি তাঁবুতে রাখা আছে ২০ থেকে দুই’শ পর্যন্ত গরু। এলাকার অনেকেই বলেছেন হাটবাজারে গিয়ে পশু কেনার ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এসব তাঁবু থেকে দেখে শুনে পছন্দের পশুটি কিনে রাখছেন।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সর্বাধিক অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়েছেন পটিয়া পৌরসভার বিভিন্ন ওযার্ডে, উপজেলার হাইদগাও, কেলিশহর, খরনা, কচুয়াই, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায়। এসব তাঁবুতে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সাইজের পশু। মৌসুমী এই ব্যবসায় জড়িতরা বলেছেন পাঁচ সাতজনের সিন্ডিকেট করে তারা এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। কেউ কেউ ঋণ নিয়ে পুঁজি দিয়েছেন। তাদের দাবি এবার তাঁবু গুলোতে রেখেছেন দেশীয় জাতের গরু। এসব গরু আনা হয়েছে পার্বত্য এলাকাসহ কক্সবাজার টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করে।পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, কোরবানি উপলক্ষে উপজেলার প্রতিটি এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের নজরদারীতে রয়েছে। পশু‘র বাজার গুলোতে যাতে কোন ধরণে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রয়েছে। এদিকে
আদর করে নাম রাখা হয়েছে ‘নবাব’। অতি আদর যত্নে লালন পালন করে বড় করে তোলা হয়েছে আদরের নবাবকে। যেমন নাম তেমন তার আচরণ। চালচলন ও ওঠাবসা যেন নবাবি হালতের। পটিয়ায় ২৪ মণ ওজনের ‘শাহী ওয়াল’ জাতের এ গরুর দাম হাকা হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ টাকা। কোরবানির জন্য প্রস্তুুত করা সুন্দর এ ‘নবাব’ কে দেখতে প্রতিদিন অনেক উৎসুক ও কৌতূহলী মানুষ ভিড় করছে। যথাযথ দাম পেলে বাজারে না নিয়ে খামার থেকেই ‘নবাব’ কে বিক্রি করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন খামারের মালিক ও শ্রমিকরা।পটিয়া উপজেলার পৌরসদরের বিওসি রোড সংলগ্ন শাহ্‌ আমির এগ্রোতে বেড়ে উঠেছে ‘নবাব’। এই এগ্রোতে অন্যান্য গরুর সাথেই প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে বেড়ে উঠেছে এ গরুটি। সরেজমিনে দেখা যায়, খামারে নাদুশ নুদুশ বিশালাকৃতির শরীর নিয়ে হেলে দুলে হাঁটছে এ গরুটি। যেমন নাম তেমন যেন তার নামের সদাচারণ!এস এ এগ্রোর মালিক সৌখিন খামারি পটিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, ‘শাহী ওয়াল’ জাতের এ গরুটিকে অনেক ছোট অবস্থায় ৮–১০ মাস পূর্বে ক্রয় করা হয়েছিল। এটি আস্তে আস্তে বড় হতে থাকলে গরুটির সুন্দর ও সুঠাম দেহের জন্য খামারের কর্মচারীরা আদর করে নাম রাখেন ‘নবাব’। তিনি আরো জানান, অনেক খাবার আছে যেগুলো গরু মহিষ বা প্রাণীকে খাওয়ালে চর্বি বেড়ে যায়। আমি আমার খামারে এসব খাবার সম্পূর্ণ বাদ দিয়েছি। স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক এবং দানাদার খাবার দিয়ে গরু গুলোকে কোরবানির জন্য বড় করে তুলেছি। মোটামুটি লাভ পেলেই ক্রেতাদের ছেড়ে দিচ্ছি।

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: