সাতক্ষীরায় ১৪-ই ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের গণসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:২১

ছবি সমসাময়িক
  মোঃ মানছুর রহমান (জাহিদ)।। সাতক্ষীরায় চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪-ই ফেব্রুয়ারি সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাচন।পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের গণসংযোগ আর প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠছে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের অলি-গলি থেকে শুরু করে চায়ের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো । পৌরসভার রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লা এখন মিছিল, স্লোগানমুখর। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধু নির্বাচন । নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ততই তুঙ্গে উঠছে। পোস্টারিং ও প্রচার-প্রচারণায় সর্বত্রই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে । ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে প্রার্থী, প্রার্থীদের নিকট আত্মীয়-স্বজন এবং কর্মী-সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা । পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লা ও অফিস পাড়া ছাড়াও নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পৌর এলাকার পাশের ইউনিয়নগুলোতেও ।এ নির্বাচনে বর্তমান মেয়র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র ধানের শীষ মার্কা প্রতীকের প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতি , আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কা প্রতীকের নাসেরুল হক ও নারিকেল গাছ মার্কা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসিম ফারুক খান মিঠু'র মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে পৌর এলাকার অধিকাংশ ভোটারদের অভিমত ।সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে ০৫ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন । এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ।সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনােনীত প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক নৌকা প্রতীক, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র মনোনীত প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতি ধানের শীষ প্রতীক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মনােনীত প্রার্থী ডা . এস.এম মুসতাফীজ উর - রউফ হাত পাখা প্রতীক, এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসিম ফারুক খান মিঠু নারিকেল গাছ প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাে . নুরুল হুদা জগ প্রতীক।সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ০১,০২ ও ০৩ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন প্রার্থী।এরমধ্যে জ্যোৎস্না আরা পেয়েছেন চশমা প্রতীক , তাজিনা আক্তার পেয়েছেন আনারস প্রতীক ও নুরজাহান বেগম পেয়েছেন জবা ফুল প্রতীক।সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী।এরমধ্যে অনিমা রানী মন্ডল পেয়েছেন আনারস প্রতীক, ফরিদা আক্তার বানু পেয়েছেন জবা ফুল প্রতীক, মরিয়ম পারভীন পেয়েছেন পেয়েছেন টেলিফোন প্রতীক ও মােছাঃ রওশনারা পেয়েছেন চশমা প্রতীক ।সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী।এরমধ্যে গুলশান আরা পেয়েছেন চশমা প্রতীক, ফারহা দীবা খান সাথী পেয়েছেন বলপেন প্রতীক, মােছাঃ রাবেয়া পারভীন পেয়েছেন জবা ফুল প্রতীক , মােছাঃ রুবিনা জামান খান শাউলি পেয়েছেন আনারস প্রতীক , সাহিদা আক্তার ময়না পেয়েছেন অটো রিক্সা প্রতীক।প্রত্যেক প্রার্থী নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন।নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও শোডাউন বেশ চোখে পড়ার মতো।পথসভা ও উঠান বৈঠক করে প্রত্যেক প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী নাসেরুল হক ব্যাপক গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি সমানভাবে চালাচ্ছেন উঠান বৈঠক ও মাইকিং।জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ভোটারদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পৌর এলাকার তৃণমূলে সকল নেতাকর্মী নৌকার বিজয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো জলাবদ্ধতা। আপনারা দেখেছেন গত বর্ষা মৌসুমে সাতক্ষীরা পৌরসভার বাসিন্দারা কি পরিমাণ ভোগান্তির শিকার হয়েছিল। আমি নির্বাচিত হলে জলাবদ্ধতা নিরসনে পাড়ায় পাড়ায় রাস্তা ও ড্রেনগুলো সংস্কার করব। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পরিকল্পনামাফিক সমস্ত পৌরসভাকে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে।এছাড়াও বর্তমান মেয়র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র মনোনীত প্রার্থী তাসকিন আহমেদ চিশতি ও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।তিনিও প্রচার প্রচারণায় পিছিয়ে নেই।দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া, মহল্লা ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন।তিনি বলেন, আমি সবসময় নির্ভেজাল ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাসী।আমি সহায় সম্বলহীন অসহায় মানুষের পাশে থেকে তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছি।অসহায় লোকজনকে বিধবা ও বয়স্ক ভাতার কার্ড দিয়েছি।মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা দিয়েছি। পৌরসভার রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের দিনরাত এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছি।পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি।শহরের সড়কগুলোকে রাতে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করেছি। পৌরবাসী পেয়েছেন সুন্দর আধুনিক পৌর শহর।জমির মূল্য বেড়েছে কয়েকগুণ। আগের চেয়ে জলাবদ্ধতা কমেছে। নিয়মিত পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে।মেয়র হিসেবে করোনাকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছি। পৌরবাসীর ঘরে-ঘরে পৌঁছে দিয়েছি চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। এমনকি আমি নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছি জনগণকে সেবা দিতে গিয়ে । এখন সিদ্ধান্ত নেবেন ভোটাররা কাকে মেয়র বানাবেন ।একইভাবে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও । সবাই নিজ নিজ প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন । প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে টানতে নানা রকম ওয়াদা, প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন অঙ্গিকার করছেন ।পৌরসভার বিভিন্ন শ্রেণীর-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, যেমন শান্তিপূর্ণভাবে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা ও গনসংযোগ করছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: