মণিরামপুরে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট মেহেদী হাসান এর বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৫৯

ছবি সমসাময়িক

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি।।

যশোরের মনিরামপুরে সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ঘোষিত ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন এক সাধারণ সদস্য (মেম্বর) প্রার্থী। কারচুপির অভিযোগ এনে পুনরায় ভোট গণনা ও গেজেট স্থগিত চেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেছেন। আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন। রায়ে বিবাদীদেরকে ফের ভোট গণনা করতে ও গেজেট স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারক মামনুর রহমান ও খন্দকার দিলুরুজ্জামানের যৌথ বেঞ্চ এ রায় দেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আইনজীবীর সার্টিফাই কপি হাতে পেয়েছেন আবেদনকারী। এরআগে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন। তিনি টর্চ লাইট প্রতীকে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। মাত্র ৩ ভোটের ব্যবধানে তাঁকে হারিয়ে দিয়ে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মেহেদী হাসানকে জয়ী ঘোষণা করার অভিযোগ করেছেন দেলোয়ার হোসেন। রিটে বিবাদীরা হলেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খন্দকার, যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান, রোহিতা ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ, রোহিতা চার নম্বর ওয়ার্ডের রোহিতা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মহিতোষ চক্রবর্তী ও বিজয়ী মেম্বর প্রার্থী মেহেদী হাসান। অভিযোগকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত ২৮ নভেম্বর মনিরামপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রোহিতা চার নম্বর ওয়ার্ড থেকে আমি টর্চ লাইট প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করি। আমার ভোট কেন্দ্র রোহিতা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সাড়ে ৩ হাজার পুরুষ ও নারী ভোটারদের জন্য আলাদা ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ জন মেম্বর প্রার্থীর মধ্যে পুরুষ কেন্দ্রে আমি ভোট পেয়েছি ৩৩০টি। আমার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মেহেদী হাসান পান ৩১৩ ভোট। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মহিতোষ চক্রবর্তী চুড়ান্ত ফলাফল শিটে বাতিল ভোট লিখতে যেয়ে কাটাকাটি করেছেন। প্রথমে বাতিল ভোট ৫০ দেখিয়েছেন। পরে সেখানে কাটাকাটি করে ৫৬ লিখেছেন। টিউবওয়েলের প্রার্থী মেহেদী হাসানের ভোট আগিয়ে দিতে তিনি আমার ৬টি ভোট বাতিল দেখিয়েছেন। এছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থীদের থেকে মেম্বর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১৭ ভোট বেশি কাস্টিং দেখানো হয়েছে এ কেন্দ্রে। সেই ১৭ ভোট কারচুপি করে টিউবওয়েলের প্রার্থীকে দিয়েছেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মহিতোষ চক্রবর্তী। দেলোয়ার হোসেন বলেন, মহিলা কেন্দ্রে রাত সাড়ে ৮ টা বেজে গেলেও ফলাফল ঘোষণ করছিলেন না প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গৌতম কুমার। প্রতিবাদ জানালে গণনা কক্ষের ভিতরে নিয়ে এক ঘন্টা আমাকে আটকে রাখে। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রিসাইডিং অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ ডেকে আনেন। পুলিশ এসে আমার দুই এজেন্ট ও আমাকে মারপিট করে। তখন ফলাফল ঘোষণা না করেই তড়িঘড়ি কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। এ প্রার্থী অভিযোগ করেন, ফলাফল ঘোষণা করে কেন্দ্রে সিট সেঁটে দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বরং আমাকে আটকে রেখে পুলিশ এনে বাইরে আমার লোকজনদের পেটানো হয়েছে। এ কাজে টিউবওয়েলের প্রার্থীর লোকজনও অংশ নেন। দেলোয়ার হোসেন বলেন, পরের দিন নির্বাচন অফিসে ফের ভোট গণনার দাবি নিয়ে গেলে তাঁরা আমাদের আবেদন রাখেননি।এ বিষয়ে রোহিতা ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, রোহিতা ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের (৫ ও ৬ নম্বর) ভোট কেন্দ্রের ভোট গণনার আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে রিট হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এখনো কোন কাগজপত্র হাতে পাইনি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: