শালিখার পাট চাষ করে পানির অভাবে বিপাকে পড়েছে কৃষক

রাশেদ রেজা মাগুরা প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২২ ২০:৩৯

রাশেদ রেজা মাগুরা প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২২ ২০:৩৯

ফাইল ফটো

মাগুরার শালিখায় পাট চাষ করে বিপাকে এ অঞ্চালের হাজারো চাষী। অনেক দিন ধরে চাহিদার তুলনায় বৃষ্টিপাত না হবার জন্য খাল-বিল, নদী-নালা এমনকি পুকুরেও পানি না থাকায় পাট কেটে জাগ না দিতে পেরে হতাশ হয়ে দিন কাটাচ্ছে শালিখা উপজেলার হাজারো কৃষক।

আষাঢ় মাস পার হয়ে শ্রাবণের ১০ দিন কেটে গেলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না, মাঝে আষাঢ়ের শেষে দুই এক ফোটা বৃষ্টির দেখা পেলেও লাভ হয়নি পাট চাষিদের। তবে শ্রাবণের শেষে কোন রকম বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেছে যাহা কৃষকের কোন কাজে আসেনি এবং এখনো আসছে না, সেচ পাম্পের সাহায্যে ইতি মধ্যে এই উপজেলার ৩৯৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের কাজ প্রায় শেষ করেছে কৃষকেরা।
যদিও সেচের পানি সাহায্যে জমিতে ধান পাট চাষ করা যায়, কিন্তু পাট জাগ দিতে তো অনেক পানির প্রয়োজন হয়। কোন রকম পানিতে তো আর পাট জাগ দেওয়া যায়না। কারন এতে আঁশের চেহারা নোংরা হয়, সোনালী আঁশ তার নিজের কালার হারিয়ে বে মানান অবস্থাতে পরিণত হয়। ফলে দাম কমে যায়। চাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আবার শুধু তাই নয় এলাকা দূষিত হয়ে যায়, দূর্গন্ধ বেড়ে যায়। রোগ জীবাণু ছড়ায় বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন দৈনিক সমসাময়িক কে জানান, এ বছর উপজেলার তালখড়ি, ধনেশ্বরগাতি, শালিখা, আড়পাড়া, শতখালী, গঙ্গারামপুর, বুনাগাতি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। এ বছর পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৪০ মেট্রিক টন। পাট চাষে অন্য সব ফসলের তুলনায় খরচ অনেক কম এবং লাভ অনেক বেশি হবার ফলে এই উপজেলার হাজারো কৃষক পাট চাষ করছে প্রতি বছর, বৃষ্টি না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে কৃষক ভাইদের।

উপজেলার সীমাখালী এলাকার সার ও কীটনাশক ব্যাবসায়ী সজীব এন্টার প্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ইসরাত আহমেদ সজীব আরো জানান, আমাদের অঞ্চলে চিত্রা নদী থাকার ফলে, পাট চাষিদের তেমন একটা ঝামেলা পোহাতে হয়না তাই এই অঞ্চালে পাটচাষে চাষিদের একটু আগ্রহ বেশি। তবুও এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে পানি খুবই কম। অন্যান্য বছর বর্ষাকালে নদীর পানি কুল পর্যন্ত পৌছায়। ফলে পাট চাষীদের পাট জাগ দিতে অতি সহজ হতো। এমনকি পাটের আঁশ ছাড়াতে এবং গাড়িতে করে রাস্তার ধার থেকে পাটের আঁশ বাড়িতে নিতেও সহজ হতো। কিন্তু এবারের মৌসুমে নদীর পানি অল্প থাকায় চাষীদের একটু দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অপর দিকে শতখালী, গঙ্গারামপুর, তালখড়ি ইউনিয়নের চিত্রা নদী ও আড়পাড়া, ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়নের পার্শবর্তী ফটিক নদীতে পানি এই বর্ষাতে বাড়েনি।
পাট চাষীরা অন্য বছরের ন্যায় পাট জাগ দেওয়া সহজ হতো, কিন্তু এবার অনেকটা অল্প পানিতে পাট জাগ দেবার ফলে নদীর মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলার ২নং তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামের হালিম মোল্ল্যা জানান, পাট জাগ দেবার জায়গা না পাবার কারণে পাট কাটতে ভয় পাচ্ছে কৃষকেরা এলাকার পুকুরগুলোতে হাটুপানি, পাশের ব্যাঙ নদীতে যা পানি আছে তাতে জায়গা সংকট, পাট চাষীরা বড় বিপদে আছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: