মণিরামপুরে কৃষকের ৬০০ ড্রাগন গাছ কর্তন, মেম্বারের দুই ছেলেকে ফাঁসানোর অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩৬

বিশেষ প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩৬

ছবি- নিউজ প্রতিনিধি।।

মোঃ ওয়াজেদ আলী, বিশেষ প্রতিনিধি।।

যশোরের মণিরামপুরে রাতের আঁধারে এক কৃষকের বাগানের বেশ কিছু ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদ নামের ওই কৃষক। তিনি মণিরামপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের ছবেদ আলীর ছেলে। তিনি ইঞ্জিনিয়ার পেশা ছেড়ে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে তোলেন আসর আলী এগ্রো বাংলাদেশ লিমিটেড নামে ড্রাগন বাগান।তার বাগানে প্রতিনিধি চার থেকে পাঁচ জন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এসব কিছু জানান মালিক এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদ ।

এই ঘটনায় গত ৩০ অক্টোবর সোমবার বিকেলে ৩ জনকে বিবাদী ও অজ্ঞাতনামা ৩-৪জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।

এর আগের দিন রবিবার গভীর রাতে মণিরামপুর উপজেলার চালকিডাঙ্গা মাঠে অবস্থিত বাগানটিতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিজের ১১৫ শতাংশ জমিতে ড্রাগন ফলের গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে দীর্ঘদিন ধরে পরিচর্যা করে আসছেন এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদ। বর্তমানে ড্রাগন গাছগুলোতে ফল ধরা শেষ হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের আঁধারে কে বা কারা তাঁর বাগানের চৌদ্দ শত গাছের মধ্যে ছয় শত গাছ কেটে দেয়।

এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদের বাগানের দেখভাল করা ব্যক্তি মো:বাবর আলীর থেকে জানা যায় , গত রবিবার প্রতিদিনের মত সকাল ৭ টার দিকে জমিতে ড্রাগন গাছ দেখতে যান। এ সময় তিনি দেখতে পান কে বা কারা জমির ড্রাগন গাছগুলো কেটে নষ্ট করেছে।এ সময় তিনি আরো খেয়াল করেন ,ড্রাগন জমির কয়েকটি খুটি ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।এসব দেখে দ্রুতই খবর দেন মালিককে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মনিরামপুর থানাধীন চালকিডাঙ্গা গ্রামে এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদের একটি মাছের ঘের আছে। মাছের ঘের নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, প্রায় সময় হুরগাতী গ্রামের আঃ আলীম মেম্বারের দুই ছেলে মেহেদী হাসান (২৪), ২। সাগর হোসেন (১৮),সহ আব্দুলের ছেলে স্বাধীন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো ঘের অথবা ড্রাগন বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করবে।

অভিযোগে দেওয়া ২ নং সাক্ষী আসতুল্লাহ গাজীর ছেলে খবিরুল ইসলাম খুররাম বলেন, আমি ওই ঘটনা কিছুই জানিনা তবে লোকমুখে শুনেছি। পরবর্তীতে জানতে পারি আমাকে সাক্ষী করা হয়েছে।

ভোজগাতী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের দুই বারের ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, আমার দুই ছেলেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এই ঘটনায় ফাসানো হচ্ছে এবং চক্রান্ত করে আমাকে এবং আমার পরিবারকে সমাজের কাছে হেয় এবং সম্মান হানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।যে ঘেরের শত্রুতার কথা বলা হচ্ছে সেখানে আমার বিয়ায় গাজী রহমান মাত্র ৯ দিন মাসিক বার হাজার টাকা বেতনে কেয়ার টেকারের কাজ করেছে।

ঘেরের কেয়ার টেকার গাজী রহমান বলেন, আমি মাত্র ৯ দিন সেখানে কাজ করেছি। আমার বাড়ি সাতক্ষীরা আমি কাউকে চিনিনা। আমার সাথে সেখানে কিছু লোকের সাথে ঝামেলা হয়। তারপর নিজেই কাজ ছেড়ে দি। কি কারণে কাজ ছেড়ে দিলেন এমন প্রশ্নে বলেন,নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি এবং ওই ঘেরের মালিক দিলশাদের সাথে অনেকের শত্রুতা আছে।

অভিযোগে ১ নং বিবাদী মেহেদী বলেন, আমাদের কে বিভিন্ন সময় বাড়িতে এসে দিলশাদের অনুসারীরা ভয়ভীতি সহ জীবন নাশের হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। যা স্থানীয় সবাই জানেন। আমরা ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।

ভুক্তভোগী এ জেড এম মারুফ উল ইসলাম দিলশাদ বলেন,আমি অনেক কষ্ট করে ড্রাগন বাগান করেছি, যারা আমার ধরন্ত গাছ কেটেছে তাদের আমি কঠোর শাস্তি দাবি করছি ।আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।


উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক বলেন, আমরা সংবাদ পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নিয়ে ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেছি। ড্রাগন বাগানে প্রায় ৮ লক্ষ্য টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


মণিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন,আমি তদন্ত ওসি মাহবুবর রহমানকে সাথে নিয়ে সরজমিনে ড্রাগন বাগান পরিদর্শন করেছি। তদন্ত পূর্বক আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: