যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২২ ১৮:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২২ ১৮:১৩

ছবি সমসাময়িক
বিশেষ প্রতিনিধি।। যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহীকে আটক করেছে র‌্যাব সদস্যরা। শাহী যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ৮ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকাল আনুমানিক চারটার দিকে তার ভাড়া বাসা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব-৬ সদস্যরা। সে কাজীপাড়া তেতুল তলা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। মামলা সুত্রে জানা যায়, রিয়াদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় । ওই ঘটনার জের ধরে ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রিয়াদ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ওই দিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ১৫ জুলাই নিহতের মামা রফিকুল ইসলাম রাজু বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে শাহী-সহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান, যবিপ্রবির ছাত্র ফয়সাল তানভীর ও আজিজুল ইসলাম, যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার আজিজুল হক খোকনের ছেলে সজিবুর রহমান, শহরের মিশনপাড়ার হাফিজ আহমেদের ছেলে সালসাবিল আহমেদ জিসান, পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার মৃত আবদুল খালেকের ছেলে ইয়াসিন মোহাম্মদ কাজল, ঝুমঝুমপুর চান্দের মোড়ের এসএম নাসির উদ্দিনের ছেলে এসএম জাবেদ উদ্দিন, শহরের খড়কি কামার দীঘিরপাড় এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে ডিকু এবং কারবালা এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে ভুট্টো'র হত্যার সাথে জড়িত থাকায় কথা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। ২০১৪ সালের ১৬ মে কেন্দ্রীয় কমিটি সুব্রত বিশ্বাসকে সভাপতি ও শামীম হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা এর বিরোধিতা করলে ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। রিয়াদ পদবঞ্চিত গ্রুপের কর্মী ছিলেন। ১৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ক্যাফেটরিয়ায় ইফতার মাহফিলে পদবঞ্চিতদের অনুপস্থিত নিয়ে কমিটির নেতাদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হলে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে পদবঞ্চিত কয়েকজনকে মারপিট করা হয়। এ নিয়ে উত্তেজনা চলতে থাকে। ১৪ জুলাই দুপুরে নাইমুল ইসলাম রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় ডিকু, ভুট্টো, শাহী, জাবের, জিসান, সজীব শহরের দিক থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে তাদের ঘিরে ফেলে। এসময় সুব্রত ও শামীমের নির্দেশে শাহী ফাঁকা গুলি করলে ছাত্ররা ছোটাছুটি শুরু করে। এর মধ্যে সজীব তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে প্রথমে রিয়াদকে আঘাত করে। এরপর অন্যরা তাকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে পালিয়ে যায়। র‌্যাব-৬ যশোরের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ নাজিউর রহমান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহীকে আটকের বিষয় নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল ৯ এপ্রিল (শনিবার) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: