চাকুরির ১৪ বছর পর ইংরেজি প্রভাষকের সনদ জাল প্রমানিত,থানায় মামলা

মণিরামপুর প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪ ২০:৪৭

মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪ ২০:৪৭

ফাইল ফটো।।

মনিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুরে বাহিরঘরিয়া আলিম মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হাদিউজ্জমানের চাকুরির ১৪ বছর পর তার নিবন্ধন সনদটি জাল প্রমাণিত হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ(এনটিআরসিএ) সম্প্রতি ওই সনদটি যাচাই বাছাই শেষে জাল প্রমানিত হওয়ায় প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বাদি হয়ে মনিরামপুর থানায় বুধবার রাতে মামলা করেন। তবে রহস্যজনক কারনে এখনও চাকুরি থেকে হাদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়নি। বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে জাল সনদধারী হাদিউজ্জামানকে চাকুরি থেকে বহিষ্কারসহ গ্রেফতারের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলার বাহিরঘরিয়া-গোপালপুর আলিম মাদ্রাসায় হাদিউজ্জামানকে ২০১০ সালের ১৫ জুন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পর পরই তিনি এমপিওভ‚ক্ত( ইনডেক্স নং-ঘ২০৯৬৫৬২ )হন। সেই থেকে ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে হাদিউজ্জামান চাকুরি করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি বেতনভাতা বাবদ সরকারের অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করেন। চাকুরির প্রথম থেকেই অভিযোগ ওঠে হাদিউজ্জামানের নিবন্ধন সনদ নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে হাদিউজ্জামানের দাখিলকৃত ইংরেজি বিষয়ের নিবন্ধন সনদটি জাল। কিন্তু যখন যিনি সভাপতি হন তাকে ম্যানেজ করে হাদিউজ্জামান চাকুরি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি ডা.আতিউর রহমান জাল নিবন্ধন সনদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গতবছর ৮ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ফলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিকাশ চন্দ্র সরকার ওই নিবন্ধন সনদটি যাচাই বাছাইয়ের জন্য গতবছর ১৫ নভেম্বর এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। যাচাই বাছাই শেষে এনটিআরসিএ থেকে হাদিউজ্জামানের সনদটি ভ‚য়া ও জাল উল্লেখ করে সহকারি পরিচালক(পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন-৩) তাজুল ইসলাম প্রত্যয়নপত্র দেন গত ১৮ জানুয়ারি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। যার একটি অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পাঠানো হয়। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের নির্দেশনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বাদি হয়ে গত বুধবার রাতে প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তবে হাদিউজ্জামান জানান, মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেনা। এ দিকে এখনও হাদিউজ্জামানকে চাকুরি থেকে বহিষ্কার না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষক প্রতিনিধি আরবি প্রভাষক তাজাম্মুল হক জানান, মানবিক কারনে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। গভর্নিংবডির সভাপতি ডা.আতিউর রহমান জানান, হাদিউজ্জামান কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে ম্যানেজ করে ফেলায় বহিষ্কার করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বলেন, বহিষ্কারের জন্য পর কয়েকটি সভা আহŸান করা হলেও অধিকাংশ সদস্যরা উপস্থিত হননি। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মেহেদী মাসুদ মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেকোন মুহুর্তে হাদিউজ্জামানকে গ্রেফতার করা হবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: