অভয়নগরে এক মুচিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৪২০ টাকা জরিমানা আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ১০:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ১০:১৭

ছবি সমসাময়িক

অভয়নগর প্রতিনিধি।।

অভয়নগরে ফুটপাত দখলমুক্ত করাকে কেন্দ্র করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা আদায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। গত ২৪ নভেম্বর (বুধবার) বিকালে নওয়াপাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাত দখল করে যত্রতত্র গড়ে ওঠা দোকানপাটে জরিমানা আদায় করা নিয়ে এ অলোচনার সৃষ্টি হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠে সড়কের এক কোনায় বসা অসহায় জুতা সেলাই করা এক মুচিকে ৪২০ টাকা জরিমানা আদায় করা কে কেন্দ্র করে। বাজার এলাকা ঘুরে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আমিনুর রহমানের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ( ভূমি) তানজিলা আখতার এসময় বেশ কিছু ফুটপাত দখলকারীকে জরিমানা আদায় করা হয়। যাত্রীদের চলাচলের (৩ - ৪ ফুট) ফুটপাত দখলকারী ব্যবসায়ীদের ২০০, ২৫০, টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং রাস্তার এক কোনায় বসা মুচিকে জরিমানা করা হয় ৪২০ টাকা। ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানার আদায়ের সংবাদ পেয়ে সেখানে জাতীয় সপ্তাহিক কর্মক্ষেত্র পত্রিকার অভয়নগর সংবাদদাতা মোঃ কামাল হোসেন উপস্থিত হয়ে ছবি তুলতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান তার দায়িত্ব কর্তব্য পালনে বাঁধা সৃষ্টি সহ তার সাথে খারাপ আচারণ করেছে বলে জানান সাংবাদিক মোঃ কামাল হোসেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুর রহমান দৈনিক সমসাময়িক নিউজ কে বলেন তার সাথে কোন খারাপ আচারণ করা হয়নি। আমি তাকে চিনিনা বিধায় আদালত পরিচালনা কালে তিনি পরিচয় না দিয়ে ছবি তুলছিলেন এই জন্য তাকে ডেকে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে। ফুটপাত দখল মুক্ত রাখতে আমরা চেষ্টা করছি আপনারা সহযোগিতা করবেন। জরিমানা আদায় সম্পর্কে জুতা সেলাই করা (মুচি) প্রদীপ দাস বলেন, আমি রাস্তার কোনায় বসে জুতা সেলাই করি এ কর্মের উপর'ই আমার সংসার চলে। কাল সারাদিন ২২০ টাকা উপার্জন করেছিলাম আমাকে জরিমানা করা হলো ৪২০ টাকা। আমি অনেক আঁকুতি মিনতি করে তাদের অনুরোধ করেছিলাম আমাকে ক্ষমা করতে। ভেবেছিলাম স্যারেরা শিক্ষিত লোক তারা আমার দুঃখটা বুঝবে কিন্তু তারা বুঝলোনা। আমাকে জরিমানার টাকা দিতে হল। মুচি কে ৪২০ টাকা জরিমানা আদায়! বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে দৈনিক সমসাময়িক নিউজ এক প্রশ্নের জবাবে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) তানজিলা আখতার বলেন নিয়ম মেনেই জরিমানা আদায় করা হয়েছে। লোকটা আমার ব্যক্তিগত শত্রু নয়, সে অসহায় এবং গরীব মানুষ বলেই আমি নিজে এর আগেও তিনবার আদালত পরিচালনা কালে তাকে জরিমানা আদায় না করে সতর্ক করেছি। এবং তাকে অন্য স্থানে দোকান বসাতে বলেছি কিন্তু কিছুতেই তিনি কথা শুনেন নাই। এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েক জন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পথচারীরা বলেন , প্রায় নওয়াপাড়া বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবসায়ীদের জরিমানার করা হয়। তবে ফুটপাত দখল মুক্ত করতে কোন কার্যক্রম দেখা যায় না। তারা আরো বলেন গত ১৪ নভেম্বর রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা দখল মুক্ত করতে ৩ দিনে আল্টিমেটাম দেওয়া হয় কিন্তু অদৃশ্য কারণে ১২ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ বছর যাবতকাল নওয়াপাড়া বাজারের বিভিন্ন স্থানের উল্লেখযোগ্য গার্মেন্টস পট্টি, জুতাপট্টি, চুড়িপট্টি গুরুহাটা, ভূষিপট্টি সহ কাঁচাবাজেরে সড়কগলো দখলদারদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে চুড়িপট্টি'র ১৬ ফিট রাস্তা আজ ৪ ফিট হয়ে গেছে এ সকল ফুটপাত দখল মুক্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন ভুমিকা দেখা যায় না। স্থানীয় এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে ফুটপাত দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়ে বলেন জরিমানা করে জনগনের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না কাজেই আমরা জরিমানা নয় দখল মুক্ত ফুটপাত চাই।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: