যশোরের বিভিন্ন সবজির চারা যাচ্ছে দেশের ৩৫ জেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২০ ০৭:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২০ ০৭:১৫

ছবি সমসাময়িক
  যশোর প্রতিনিধি।। যশোর জেলার সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে উৎপাদিত হচ্ছে বিভিন্ন সবজির চারাগাছ। এখানকার উৎপাদিত সবজির চারাগাছ দেশের ৩৫ জেলার কৃষকেরা ক্রয় করছেন। এবছর সবজির উচ্চমূল্য ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে চারাগাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ মৌসুমে দেড়গুণ বেশি দামে চারাগাছ বিক্রয় হচ্ছে। এবছর অতিবৃষ্টি ও ঝড়ে মাঠের সবজিক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এজন্য পুন:উৎপাদনের জন্যে নতুন চারাগাছ ক্রয় করেছে কৃষকেরা। ফলে বেশি পরিমাণে চারাগাছ বিক্রি হয়েছে, একই সাথে এবছর সবজির বাজারমূল্য বৃদ্ধি পাওয়াতে কৃষকেরা প্রচুর সবজি উৎপাদন করছে ফলে চারাগাছের চাহিদা বেশি হওয়াতে এবার দামও বেশি চারাগাছের। গত মৌসুমে প্রতি হাজারে যেসব চারাগাছ ৯শ’ টাকা থেকে একহাজারে বিক্রি হচ্ছে সেখানে এবার প্রতি হাজারে পনেরো শত থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। যশোর সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, এক মৌসুমে একটি বীজতলায় (সেডে) পাঁচবার চারাগাছ উৎপাদন করা যায়। এক বিঘা জমিতে বিভিন্ন চারাগাছ ভেদে পুরো মৌসুমে পাঁচবারে ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ চারাগাছ উৎপাদিত হয়। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। যেসব চাষীরা প্রক্রিয়া সঠিকভাবে মেনে চলে তারা লাভবান হয়ে থাকেন। আব্দুলপুরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বিভিন্ন সবজির নানা জাতের চারাগাছ উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে বাঁধাকপির জাত কেকে ক্রস, আরশি, গ্রীণ ৬০, এটম কুইন, ফুলকপির জাত টপিক্যাল ১১, স্নো বক্স, স্নো হোয়াইট, নিনজা, লাউয়ের জাত মার্শাল, টিয়া সুপার, মার্টিনা, টমেটোর জাত হাইটম, বারি-৪,৮, মিন্টু সুপার, সবচেয়ে দামী সবজি ব্রোকলি’র জাত ম্যারোডোনা, টপিক্যাল কুইক, নিনজা, ওল কপির জাত ০০৫, চ্যালেঞ্জার, বেগুণের জাত চ্যাগা, ভাঙ্গর, মরিচ বগুড়া, মাগুরা, বারোমাসি। চারাগাছ উৎপাদনকারী চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ২০ বছর ধরে বর্গাচাষ করছি, সবজির চারা উৎপাদনে আমার ৫ জনের সংসার বেশ ভালোই যাচ্ছে। আমাদের কৃষি দপ্তর থেকে সহযোগীতাও সঠিকভাবে পাচ্ছি। ফলে সঠিকভাবে পরিচর্যা করার কারণে অধিকাংশ সময়ে আমাদের লাভ হচ্ছে। ঝিকরগাছা থেকে চারাগাছ কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করবেন। এজন্য আব্দুলপুরের চারাগাছের মান ভালো হওয়াতে কিনতে এসেছি। ঝিনাইদহ থেকে চারাগাছের ক্রেতা ইউসুফ আলী বলেন, এবছর পটল বেঁচে বেশ লাভ হয়েছে। এজন্য ফুলকপি লাগাবো। তিন হাজার চারাগাছ কিনবো, আমি এখানে নিয়মিত কেনার কারণে আমার থেকে দাম কম রাখে, আর মানও বেশ ভাল। কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, এবছর প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে অনেক কৃষকের চারাগাছ নষ্ট হয়েছে এজন্য একই কৃষক দ্বিতীয়বার কেনাতে চাহিদা বেড়েছে, তবে মানবিক কারণে তাদের থেকে দ্বিতীয়বার দাম একটু কমও রেখেছি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: