
মনিরামপুর(যশোর)।। গত ১৩ই জানুয়ারি সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ ইকবাল হোসেনের রত্নগর্ভা জয়িতা পুরস্কারপ্রাপ্ত মা রাবেয়া বেগম।
জানাযায় বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগে যশোরের একটি সেবরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল আটটার দিকে তিনি ইন্তিকাল করেন(ইন্নালিল্লাহী—-রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। মৃত্যুকালে পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। রত্নগর্ভা এ মায়ের ইন্তিকালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বামীর প্রতিষ্ঠিত মনিরামপুর সরকারি কলেজ মাঠে প্রায় ১০ হাজার মুনসল্লির অংশগ্রহনে বিকেলে জানাজা নামাজ শেষে সদর ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে স্বামী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত ডা. মহিউদ্দিন সরদারের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান নিস্তার ফারুকের মা রাবেয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভূগছিলেন। গত সপ্তাহে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাতে তাকে আইসিইউতে(ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল আটটায় তিনি ইন্তিকাল করেন। এ দিকে শহীদ ইকবালের মায়ের ইন্তিকালের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবার সহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগস, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, মোহাম্মদ মুছাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ শহীদ ইকবালের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন। বিকেলে শহীদ ইকবালের পিতা প্রায়ত ডা.মহিউদ্দিন সরদারের প্রতিষ্ঠিত মনিরামপুর সরকারি কলেজ মাঠে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লির অংশগ্রহনে ফতেয়াবাদ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এর পূর্বে মাহবুব হাসানের ফারুকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, মোহাম্মদ মুছা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ ইকবাল হোসেন, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, উপজেলা শাখার আমির ফজলুল হক, সেলিম জাহাঙ্গীর, পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আবদুল হাই, অ্যাডভোকেট মকবুল ইসলাম, মিজানুর রহমান প্রমুখ। উল্লেখ্য শহীদ ইকবাল হোসেনের পিতা তৎকালিন মনিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মনিরামপুর সরকারি কলেজসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ডা.মহিউদ্দিন সরদার ১৯৭৯ সালের ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ফতেয়াবাদ গ্রামের নিজ বাড়িতে যাবার সময় কলেজের পশ্চিমপার্শে আততায়ীর হাতে নৃসংশভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হন।
এর পর থেকে ছয় ছেলে এবং তিন মেয়েকে অতিকষ্টে লালন পালন করেন রাবেয়া বেগম। তার বড় ছেলে শহীদ ইকবাল হোসেন পিতার অবর্তমানে কয়েকবার ইউপি চেয়ারম্যান এবং পরবির্ততে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং বার বার পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। এ ছাড়া শহীদ ইকবাল হোসেন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে মনিরামপুর থেকে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হন। অন্যদিকে পিতার ইউনিয়নে আরেক ছেলে নিস্তার ফারুকও কয়েবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। রাজনীতিতে রয়েছে এ পরিবারের অনবদ্য ভূমিকা। সব মিলিয়ে ইতিপূর্বে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রত্নগর্ভা মা হিসেবে শহীদ ইকবালের মা রাবেয়া বেগম জয়িতা পুরুষ্কারে ভূষিত হন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: