মনিরামপুরে বালু খেকো রাক্ষসদের চোঁখ পড়েছে ঝাঁপা বাওড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২১ ১৮:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২১ ১৮:২৫

ছবি সমসাময়িক
  স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)।। যশোরের মনিরামপুরে বালু খেকো রাক্ষসদের চোঁখ পড়েছে এবার ঐতিহ্যবাহী ঝাঁপা বাওড়ে। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভেঙ্গে যাওয়া সিমানা বাঁধ মেরামতের নামে বালু উত্তোলনের পর স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নামে বালু উত্তোলন করা হলেও নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসা। আর বাওড় থেকে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুইটি ইউনিয়নের যুবলীগের দুই সভাপতি।প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে বাওড়তীরে অবস্থিত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার পড়েছে হুমকির মুখে। যেকোন মুহুর্তে তীরের মাটি ধ্বসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিশাল এ বাজারটির একটি অংশ বাওড়ের মধ্যে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে সম্পূর্ন নির্বিকার। জানাযায়, ঝাঁপা বাওড়ের পূর্বতীরে রাজগঞ্জ বাজারটি অবস্থিত। পাশে রয়েছে রাজগঞ্জ মাধ্যমিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এর উত্তর এবং দক্ষিনপাশে রয়েছে দুইটি ভাসমান সেতু। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির সামনে অবস্থিত বাওড় থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহার্য্যে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন করে স্তপ করে রাখা হচ্ছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটির পশ্চিমপাশে। মুলত: সেখান থেকেই বালু বিক্রি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর এ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এমরান খান পান্না এবং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে। বালু উত্তোলনের কাজে নিয়জিত শ্রমিক ইমরান হোসেন এবং আবুল হোসেন জানান, ইমরান খান পান্না ও সোহেল রানা তাদেরকে দিয়ে বালু উত্তোলনের পর স্তুপ করিয়ে রাখছেন বিক্রির জন্য। স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি জানান, এমরান খান পান্না এবং সোহেল রানা মাত্র কয়েকদিন আগে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেন। আর প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করায় তীরের মাটি ধ্বসে মাধ্যমিক এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝকিপূর্ন হয় পড়েছে। শুধু এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, ঝুকি হয়ে পড়েছে রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিমপ্রান্তের একটি অংশ। কিন্তু এ পর্যন্ত বালু খেকোদের বিরুদ্ধে কেই মুখ খুলতে সাহসি পায়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে শুক্রবার সকালে একজন সাংবাদিক নৌকাযোগে বালু উত্তোলনের চিত্র ধারন করায় নৌকার মাঝি মান্নাকে মারপিট করা হয়েছে। মান্নার অভিযোগ সাংবাদিককে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়ায় যুবলীগ নেতা সোহেল এবং শিমুল তাকে মারপিট করে। অবশ্য ঝাপা যুবলীগ সভাপতি সোহেল রানা এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মান্নার সাথে তার সামান্য ভূলবুঝাবুঝি হয়েছে। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ কামাল তুষার জানান, বালু উত্তোলনের বিষয়টি এলাকাবাসী জানেন। তবে ম্যানেজিং কমিটির(এডহক)সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বালু উত্তোলনকারীদের পক্ষ অবলম্বন করে জানান, বিদ্যালয়ের সিমানা ভেঙ্গে যাওয়ায় তা রোধ করতে বাওড় থেকে বালু উত্তোলন করছেন পান্না এবং সোহেল রানা। তবে ভিন্নমত পোষন করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বাজার কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা চাকলাদার আবুল বাশার। তিনি জানান, বাওড় থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বিদ্যালয় ভবন এবং বাজারের পশ্চিম অংশ চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। তার অভিযোগ বিদ্যালয়ের সিমানা বাঁধের নাম করে একটি প্রভাবশালী চক্র মিলেমিশে বালু উত্তোলন করছে মুলত: ব্যবসার জন্য। বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দেওয়া চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এমরান খান পান্না এবং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল রানা, জানান বিদ্যালয়ের সিমানা রক্ষায় আশপাশে মাটি পাওয়া না যাওয়ায় বাওড় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের নির্দেশে বাওড় থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: