মণিরামপুর পৌর শহরে রাতদিন যানজট সমস্যা চরম সীমায় পৌঁছে গেছে- দেখার কেউ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০৩

ছবি সমসাময়িক
মোঃ শাহ্ জালাল।। ছবির এই চিত্র দেখলেই যে কেউ মনে করবে এটা হয়তো রাজধানী ঢাকা শহরের অলিগলির যানজট এর চিত্র। কিন্তু না, এই চিত্র টি যশোর-চুকনগর সড়কের মণিরামপুর পৌর শহরে বর্তমান যানজট সমস্যার চিত্র যা ইতিমধ্যে চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। মণিরামপুর বাজারের বুকচিরে চলে গেছে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক। একে তো ছোট সরু রাস্তা নেই কোন ফুটপাত, তার ওপর রাস্তার উভয় পার্শ্বে অপরিকল্পিত দোকানপাট, যত্রতত্র অটো, ইজিবাইক, ভ্যান ষ্ট্যান্ড আর ষ্ট্যান্ড ছাড়াই যেখানে-সেখানে যশোর-কেশবপুর-চুকনাগর গামী বাসগুলোর লোক উঠানামা তো লেগেই আছে। মণিরামপুর পৌর শহর "ক" শ্রেণীর পৌরসভা হলেও এই শহরের গুরুত্বপূর্ন মোড়গুলোতে নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। এই আজব শহরের উত্তর মাথা থেকে দক্ষিণ মাথা পর্যন্ত ভ্যানে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে এখন সময় লাগে ৩৫- ৪০ মিনিট। ভূক্তভোগী এক পথচারী অভি তার ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন এটা আমাদের জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আমি মণিরামপুরে উত্তর মাথা থেকে দক্ষিণ মাথা পর্যন্ত এসেছি একটা জরুরী কাজে যেখানে ৫ মিনিটের রাস্তা সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অতিক্রম হয়ে গেলো আমি এখানো থানা মোড় পার হতে পারলাম না। দক্ষিণ বঙ্গের ঐতিহাসিক যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলা দেশের অন্যতম দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। ১৭ টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভা নিয়ে গঠিত মণিরামপুর উপজেলায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার অন্ততঃ সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষের বসবাস। উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মণিরামপুর পৌর-শহরের বুকচিরে চলে গেছে সাতক্ষীরা-যশোর-ঢাকা মহাসড়কটি যা অত্যন্ত জনবহুল। এই সড়কটিতে প্রতিদিন ঢাকা ও সাতক্ষীরাগামী পরিবহন সহ পন্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস, ভ্যান, নছিমন-করিমন, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, স্কুটার, ইঞ্জিন ভ্যানসহ নানা ধরনের যানবাহন মণিরামপুর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। মণিরামপুর বাজারে গড়ে উঠেছে একটি বিশাল পাইকারী কাঁচাবাজার ও পাইকারী মাছ বাজার যেখানে মণিরামপুর উপজেলাসহ পাশের কেশবপুর, অভয়নগর, ঝিকরগাছা, ডুমুরিয়া ইত্যাদি উপজেলা এবং ঢাকা, খুলনা সহ বিভিন্ন শহরের ক্রেতা-বিক্রেতারা কাঁচামাল ও মাছ কেনা-বেচার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন যানববাহন নিয়ে আসে। এছাড়া সড়কটির পাশ্বেই সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার বিশাল পশু হাট, ধানের বাজার বসে। এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। যার ফলে সাধারণ মানুষের চলাচলে সমস্যা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ ও চাকরীজীবীদের অফিসের দেরী হয়ে যায় আর সড়ক দূর্ঘটনা তো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দে যশোর-চুকনগর- সাতক্ষীরা ৩৮ দশমিক ২৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হলেও মণিরামপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মাথার ঈগল কাউন্টার থেকে উত্তর মাথার ধান হাট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের কোন উদ্যোগ নেই। এমন কি এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কিছুই বলতে পারেন না বলে জানান। এই অবস্থায় মণিরামপুরবাসীর প্রাণের দাবী শহরের বুকচিরে যাওয়া যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কটি উভয় পার্শ্বে বর্ধিত করন এবং শহরের পার্শ্ব দিয়ে দ্রুত একটি বাইপাস সড়ক নির্মান করা। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় সড়ক নির্মান ও রাস্তা বর্ধিতকরার প্রতিশ্রুতি দেয়। বাইপাস সড়ক নির্মানের জন্য কখনও শহরের পশ্চিম পার্শ্ব আবার কখনও শহরের পূর্ব পার্শ্ব কয়েকবার মাপামাপি করতেও দেখা গেছে। কিন্তু বাস্তবে এটা এখনও আলোর মুখ দেখেনি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: