মণিরাপুরে নারী উদ্যোক্তা বৃষ্টির বাড়ির ছাদে বানিজ্যিকভাবে অ্যাকুয়ারিয়ামের রঙিন মাছ চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২১ ১২:৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২১ ১২:৩১

ছবি সমসাময়িক

দৈনিক সমসাময়িক নিউজ ডেস্ক।।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় মনোয়ারা পারভীন বৃষ্টি নামের এক নারী উদ্যোক্তা বানিজ্যিকভাবে অ্যাকুয়ারিয়াম এর রঙিন মাছ চাষে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন। বৃষ্টির খামারে বাহারি রঙের মাছ লাল, কমলা, কালো, বাদামি, হলুদ, রূপালি রঙের মাছের ছড়াছড়ি। গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্প, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপ্পি, অ্যাঞ্জেল প্রভৃতি বর্ণিল মাছ দেখলে চোখ জুড়ায়, মন ভরে যায়। শৌখিন মানুষ সাধারণত তাদের বাসাবাড়ির অ্যাকুয়ারিয়ামে শোভাবর্ধনে রাখেন এইসব রঙিন মাছ। প্রতি মাসে রেণু বিক্রি করে লাখ টাকা আয়ের প্রত্যাশা করছেন এই নারী উদ্যোক্তা মনোয়ারা পারভীন।
মণিরামপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষের ব্যাক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আপলোড করা ছবির মাধ্যমেই প্রথম এই নারী উদ্যোক্তার সন্ধান, তারপর বিশেষ অনুসন্ধান কে এই নারী উদ্যোক্তা? খোঁজখবরে জানাযায় মনোয়ারা পারভীন বৃষ্টি উপজেলার সালামতপুর গ্রামের আব্দুল আহাদের স্ত্রী। ২০০৫ সালে ভাগ্যবদলে স্বামীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। প্রবাসে দীর্ঘদিন অবস্থানের পর একটি মেয়ে সন্তান জন্মনিলে ২০১৩ সালে দেশে চলে আসেন। সংসার জীবনে বৃষ্টির প্রবাসী স্বামী, দশ বছরের এক মেয়ে নূর হাবিবা রিনি এবং বাঁধন নামের একটি ছয় বছরের ছেলে রয়েছে। বর্তমান নিতি রাজগঞ্জ বাজারে বসবাস করছেন।
বিশেষ এক সাক্ষাতে কথা হয় বৃষ্টির সাথে তিনি বলেন অলস সময় না কাটিয়ে কাজের মধ্যে থাকতে শখের বসেই তিনি এই খামার করেছেন। এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে স্বপ্ন দেখছেন। তিনি আরো বলেন নিজের ইচ্ছাশক্তি আর প্রবাসী স্বামীর উৎসাহে কর্মের মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে বাড়ির ছাদের ওপর কাঠ আর পলিথিন দিয়ে হাউস বানিয়ে এ বাহারি রঙিন মাছ চাষের এই খামার তৈরী। এছাড়াও বৃষ্টি তার বাড়ির ছাদে ফলজ, বনজ, ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করেছেন। এবং পার্শ্ববর্তী ঝিকরগাছা উপজেলায় ১০ বিঘা জমিতে নার্সারি করেছেন বলেও জানলেন তিনি। পাশাপাশি ১০০টি ক্যাম্বেল হাঁস পালন শুরু করলে এর মধ্যে ৭০টি হাঁস মারা যায়। কিন্তু তাতে থমকে যাননি এই নারী উদ্যোক্তা।
মাছ চাষের কারণ জানতে চাইলে বৃষ্টি বলেন বাজারে চাহিদা আছে একম কিছু নিয়ে কাজ করতে চান তিনি। বর্তমান পাপ্পি, অটোবিট, গোল্ডেন ফিস, কৈকার্প, কমেট, টিউলিফ-এর সহ মোটামুটি ২০ প্রজাতির বাহারি মাছের কালেকশন রয়েছে তার কাছে। বাহারি এই মাছ কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডারও আসছে তার কাছে।
বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ইতোমধ্যে বৃষ্টি উপজেলা মৎস্য অফিস এর সহযোগিতায় ২০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর (ছোট) বানিয়ে এ বাহারি মাছ চাষ প্রসারিত করার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বলে জানান। এজন্য এ মাছের রেণু উৎপাদনে হ্যাচারি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এবং কয়েক মাস পরই তিনি বাহারি মাছের পোনা বিক্রি করে মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা উপার্জন করার প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, আসলেই মনোয়ারা পারভীন বৃষ্টি একজন নারী উদ্যোক্তা। তিনি বানিজ্যিকভাবে রঙিন মাছের চাষ শুরু করছেন। যেটা দেখে এই জনপদের আরো বেকার-নারী পুরুষ আগ্রহী হবে ফলে বেকার সমস্যার সমাধান বয়ে আসবে। আমি এই নারী উদ্যোক্তার মাছের খামার দেখেছি এবং সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করছি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: