মনিরামপুর পৌর নির্বাচনে "কে হাসবে বিজয়ের হাসি? ভোট কেন্দ্রের অবস্থা কেমন হবে ?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারী ২০২১ ১৩:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারী ২০২১ ১৩:০৮

ছবি সমসাময়িক
 

আনোয়ার পারভেজ অনুজ।।

আসছে ৩০শে জানুয়ারি মনিরামপুর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী দু'টি বিষয় নিয়ে চলছে সকাল সন্ধা আলোচনা সমালোচনার ঝড়। মনিরামপুর পৌর নির্বাচন টেকসই গণতন্ত্রের সূচনা হোক... মনিরামপুরে কার মুখে ফুঁটবে বিজয়ের হাঁসি? ভোট কেন্দ্রের অবস্থা কেমন হবে? একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, ব্যাপকভাবে জমে উঠেছে মনিরামপুর পৌরসভার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা। ৩০ জানুয়ারী ভোট। তবে, এই নির্বাচনে মেয়র পদে দুইজন হেভিওয়েট প্রার্থী অংশ নেয়ায় পৌরসভা এলাকায় নয় বরং গোটা উপজেলাব্যাপী সর্বমহলে দু'টি বিষয় আলোচনা হচ্ছে। বিষয় দুটি হলো নির্বাচনে বিজয়ের হাসি কার মুখে ফুঁটবে? আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী,বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসানের নাকি একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব এ্যাডভোকেট শহীদ মো: ইকবাল হোসেনের? অপর বিষয়টি হলো নির্বাচনের দিন ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা অর্থাৎ ভোট কেন্দ্রগুলোর অবস্থা কেমন হবে। ভোট গ্রহন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হবে কিনা,এমন প্রশ্ন অধিকাংশ মানুষের। কারন, ইতিপূর্বে দেশে যেসকল পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেইসব পৌরসভায় গড়ে ভোট পড়েছে ৬৫{42d7c02d75ed8ad2566d5e0848d1e673e35e1703bc782a9c186d8d8d27235b37} অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ৬৫ জন ভোট দিয়েছেন। আর এই ৬৫ জনের মধ্যে গড় হিসেবে ৬৪ জনের ভোট নৌকা এবং ১ জনের ভোট ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছে। শীর্ষ জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হয়েছে গত বুধবার। নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকে পড়া এই ভোটের হিসেবটা একেবারে বেমানান বলে অধিকাংশ মানুষের মন্তব্য। যায়হোক, মনিরামপুর বিএনপির মধ্যে যেমন দলীয় কোন্দল প্রবল,তেমনি আওয়ামীলীগের মধ্যেও রয়েছে,একথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব কাজী মাহমুদুল হাসান স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য পক্ষীয় একজন প্রধান এবং অন্যতম নেতা। তবে, তিনি নৌকা প্রতীক লাভের পর আপাতত দৃষ্টিতে প্রকাশ্যে কেউ বিরোধীতা করছেননা বরং দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য পোষনের দৃশ্য দেখা গেছে। অপরদিকে, বিএনপির মধ্যকার কোন্দল নিরসন পূর্বক ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব শহীদ ইকবাল হোসেনের পক্ষে মনেপ্রাণে নির্বাচন করার জন্য জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ মিটিং করেছেন এবং আপাতত দৃষ্টিতে দৃশ্যমান কোন্দল নেই। তাছাড়া ভোট চুরি বা ভোট কেটে নেয়া রুখে দিতে ইতিমধ্যে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষের কর্মীরা আনুষ্ঠানিকভাবেই শপথ বাক্য পাঠ করেছেন। অবশ্য আমার ভোট আমি দিবো,এমন পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য নৌকার প্রার্থীর পক্ষের লোকজন আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর এখনো পাওয়া যায়নি। দলমত নির্বিশেষে রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, যেহেতু এই পৌরসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়না,কাজেই আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই ভোটারদের দ্বারেদ্বারে গিয়ে সরকারের পজেটিভ দিকগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি প্রার্থীর গুণাবলী প্রচারের মাধ্যমে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যাপক পরিশ্রম করা উচিৎ এবং নিজ দল তথা আওয়ামীলীগের সত্যিকারার্থে জনসমর্থন কেমন সেটা জানতে সকলের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টিতে অগ্রনী ভূমিকা রাখা জরুরী। আবার একই সাথে বিএনপি নেতা-কর্মীদেরও উচিৎ একইভাবে ভোট প্রার্থনার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে ধানের শীষ প্রতীকের ভোট পূর্বের চেয়ে কমেছে নাকি বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা যাচাই করা। রাজনীতি সচেতনরা আরো মনে করেন, গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী কাজী মাহমুদুল হাসান যেহেতু বিজয়ী হয়েছিলেন আর এবার যদি সুষ্ঠু ভোটে পরাজিতও হন, তবুও নৌকার ভোট কেন কমে গেল সেইসব কারন সমূহ অনুসন্ধান পূর্বক সেগুলো দূরীকরণে নেতৃবৃন্দ কাজ করার সুযোগ পাবেন। আর এটা করলে ভবিষ্যতের নির্বাচনে সর্বত্র ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মধ্যেও নির্বাচন হলে জনমতের মাধ্যমেই আওয়ামীলীগ বিজয়ী হবে। পাশাপাশি বিএনপি যদি পূর্বের নির্বাচনে পাওয়া ভোটের চেয়ে কম পায় তবে কেন ভোট কমে গেছে বা জনসমর্থন হারিয়েছে সেইসব কারন খুঁজে সাংগঠনিকভাবে সেসব দূর করতে পারবে। আর যদি ভোট বৃদ্ধি পায় তাহলে দলীয় নেতাদের প্রচেষ্টা এবং আওয়ামীলীগের প্রতি মানুষের ক্ষোভের কারনেই বিএনপির ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে স্পষ্ট ধারনা পাবেন দলটির নেতা-কর্মীরা। যেহেতু এই পৌরসভা নির্বাচনে জয় কিংবা পরাজয়ে সরকার পরিবর্তন হয়না,কাজেই নিজ-নিজ দলের জনপ্রিয়তা বা জনসমর্থন কিংবা জনহ্রাসের কারন নির্ণয়ের সূবর্ণ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে দেশে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মনিরামপুর পৌরসভা নির্বাচনকে দৃষ্টান্ত স্থাপনে প্রধান উদাহরণ সৃষ্টি করা গেলে ভাল হবে বলেও মনে করেন রাজনীতি সচেতনার।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: