শিক্ষক-শিক্ষিকার অবৈধ মেলামেশার অভিযোগ উঠিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলো ছাত্র-ছাত্রীরা

রাশেদ রেজা মাগুরা থেকে... | প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৩

রাশেদ রেজা মাগুরা থেকে...
প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৩

দৈনিক সমসাময়িক ফটো।।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে একাধিকবার শিক্ষক-শিক্ষিকার অবৈধ মেলামেশা ছাত্র-ছাত্রীরা দেখে ফেলায় ব্যাপক আলোচনার ও সমালোচনার তৈরি হয়েছে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক আলিমুজ্জামান ও শ্রাবনী আফরোজ (নার্গিস) নামে।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলে জানায়, প্রতিষ্ঠানটির শিশু ক্লাসরুমে, ফাকা সিড়ি ঘরে ও বাথরুমে একাধিকবার অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেছেন দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ, তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক আলীমুজ্জামানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আরেক অভিযুক্ত শিক্ষিকা শ্রাবণী আফরোজ (নার্গিস) তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে একটি গ্রুপের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনা জানাজানির পর শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে প্রতিবেদক কে জানান এলাকাবাসী

এ বিষয়ে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আহাদ প্রতিবেদক কে জানায়, অভিযুক্ত দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রত্যেকদিন জোড়াজোড়ি করে, এক সাথে টয়লেটে যায়, খারাপ কাজ করে। আমরা হেড স্যারের কাছে বলছি বলে এই নিয়ে ঝামেলা হয়েছে কয়েকবার। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাস চলাকালীন সময় ম্যাডামকে আলীম স্যার ডেকে নিয়ে এক পাশে নিয়ে গল্প করে আর চুমা খাচ্ছে। এর আগে একদিন আমি প্রশাব করতে যাওয়ার সময় শিশু ক্লাসের মধ্যে স্যার-ম্যাডামকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় দেখে ফেলি। এ ঘটনায় একাধিক শিক্ষার্থীরা আরো জানান, স্কুলের বাথরুমে ঐ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে একাধিকবার জড়িয়ে ধরে থাকতে দেখেছে। তাদের মধ্যে চুমা খাওয়ার মত দৃশ্য ও শিক্ষার্থীরা দেখেছেন বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও ক্লাস না নেওয়া অতিরিক্ত মারধর করার অভিযোগ রয়েছে সহকারী শিক্ষক আলীমুজ্জামানের বিরুদ্ধে। তাদের অসামাজিক কার্যালাপ দেখে ফেললে সেই শিক্ষার্থীকে ভয় ভীতি দেখান ঐ শিক্ষক।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা কয়েকবার আলিম স্যার ও নার্গিস ম্যাডামের চুম খেতে দেখেছি, জড়ায়ে ধরতে দেখেছি। শুয়ে শুয়ে জড়াজড়ি করতে দেখেছি। উলঙ্গ অবস্থায় ও দেখেছি। আমরা বেশ কয়েকবার হেড স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বরং আমরা দেখার পর কোন কিছু বললেই আলিম স্যার আমাদের মারধর করে ও ভয় দেখিয়েছে।

এ ঘটনায় নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই ঐ দুই শিক্ষকের নামে এমন অভিযোগ করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তবে এ বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়নি কেউ। এখন বিষয়টি তার হাসবেন্ড জানার পর অভিযুক্ত শিক্ষক আলীমুজ্জামানকে মারধর করলে বিষয়টি আলোচিত হয়ে যায়। তবে এমন কর্মকান্ডের জন্য ওই দুই শিক্ষক-শিক্ষিকার বিচার হওয়া উচিত। কোন শিক্ষার্থী তাদের এ অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেললে তাদের ভয়ভীতি দেখানো ও মারধর করা হতো। যে কারণে কোন শিক্ষার্থী ভয়ে মুখ খুলতো না।

এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষিকা শ্রাবণী আফরোজ (নার্গিস) এর ভাই সজিব রাতে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে তাদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। তবে বক্তব্য দেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, সজিব এসে ইংরেজিতে কি বললো এটা না বুঝেই ভয়ে ওই বক্তব্য দিয়েছে তার ছেলে। তবে তখন যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এটা ভয়ের কারনে আর সামাজিক ভাবে চাপ আসার ভয়ে সজিবের কাছে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে তার ছেলে।

রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন জানান, বিষয়টি আমি নিজে চোখে দেখেনি। নিজে চোখে না দেখে কিছু বলতে পারবোনা। আর বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনো অভিযোগ করেনি। তবে দু'দিন আগেই প্রধান শিক্ষককে দলবদ্ধ ভাবে অবগত করে শিক্ষার্থীরা। এর প্রমান পায় সাংবাদিকেরা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা থাকলে অবশ্যয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: