টাকা ছাড়া স্বজনদের সাথে বন্দীদের সাক্ষাত হয়না যশোর কোর্ট গারদে

বিশেষ প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:০৩

বিশেষ প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:০৩

নিউজ প্রতিনিধি।

ছেলের সাক্ষাত না পেয়ে গারদের সামনে কাঁদছিলেন বৃদ্ধা মা আদালত হচ্ছে মানুষের নির্ভরযোগ্য বিশ্বাসের স্থান।যেখানে মানুষ সুবিচারের আশায় আসে। আর সেই আদালতেই দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশ্যে একটি অনিয়ম কে নিয়মে পরিণত করেছে যশোরে কোর্টের দায়িত্বে থাকা কোর্ট পুলিশেরা। এখানে গারদে বন্দী আসামীর সাথে স্বজনদের দেখা করতে মাথা পিচু গুনতে হয় নিদিষ্ট অংকের টাকা। গতকাল সোমবার একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা সামনে আসে। দেখা যায়, মোনয়ারা বেগম নামের ৮০ বছর বয়সি একজন বৃদ্ধা মা গারদের সামনে দাড়িয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আর তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে তারই নাতি ৯ম শ্রেনীর ছাত্র আল ইমরান হোসেন।

কান্নার কারণ জানতে চাইলে বৃদ্ধা জানায়, গতকাল তার ছেলে ইসরাফিলকে একটি হত্যা মামলায় পুলিশে ধরে আদালতে সোপর্দ করেছে। আজ আমি, আমার ছেলের শাশুড়ী (বিয়ান), পুত্রবধু ও নাতি এসেছি তার মামলার তদবির ও ছেলের সাথে দেখা করতে। গারদে সামনে আসলে পুলিশ প্রথমে আমাদের তাড়াতে থাকে পরে দেখি পুলিশকে টাকা দিয়ে অনেকে গারদের ভিতরে বন্দী আসামীদের সাথে সাক্ষাত করছে। এসময় দাড়িমুখে রোকন নামের এক পুলিশ কনস্টেবল তাকে জানায়, আসামীর সাথে দেখা করতে মাথাপিছু একশত টাকা দিতে হবে, তাহলে দেখা হবে। উকিল মহুরি ও মামলার খরচের কারনে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় একশত টাকা দিয়ে শুধু বৌমাকে পাঠিয়েছি। আর ভাবছি অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে দশমাস দশদিন পেটে ধরে জন্ম দেওয়া ছেলেকে দেখতে লাগবে টাকা। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় আমি মা হয়েও আমার মানিকটাকে একটু কাছ থেকে দেখতে পারলাম না। বলে সে পুনরায় কাঁদতে শুরু করে। পরে বৃদ্ধার কান্না দেখে উপস্থিত দৈনিক বিডি খবরের বিশেষ প্রতিনিধির সহোযোগিতায় বৃদ্ধাকে তার ছেলের সাথে সাক্ষাত করানো হয়।
বন্দীদের সাথে সাক্ষাত করতে আসা আরো কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, টাকা নেওয়ার বিষয়টা সম্পুর্ন অবৈধ হলেও এই প্রথা এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি সকলে জানলেও এই অনিয়মের বিরুদ্ধে নেই কোন পদক্ষেপ। তারা আরও বলেন অদালতের মত একটি পবিত্র স্থানে দিনের পর দিন এই অনিয়ম চললেও তাদের (পুলিশের) বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না কোন আইনি ব্যবস্থা। কাজেই আমরা সাধারণরা পুলিশের এই দুর্নীতিকে নিয়ম হিসাবে মানতে বাধ্য হচ্ছি।
এ বিষয়ে কোট-ইন্সপেক্টর রোকসানাকে অবহিত করলে তিনি বলেন, যদি কেউ অনৈতিক ভাবে কোন টাকা নেয় বা কাউকে হয়রানি করে সে দায় একান্তই তার নিজের। নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: