মনিরামপুরে নিন্মমানের সামগ্রি দিয়ে স্কুল নির্মানের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২১ ১৪:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২১ ১৪:১৪

ছবি সমসাময়িক
  স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানে নিন্মমানের উপকরন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে নির্মানকাজ সম্পন্ন হবার আগেই সিড়ি, ছাদের সিলিংসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। আর এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রতিবাদকারীদের সাথে দূর্ব্যবহারসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী নির্মানকাজ বন্ধ করে দিয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেন। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, চলতি অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের(এলজিআরডি) অধিন মনিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মানের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে কাজটি পান যশোরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স যমুনা প্রোকৌশলী। প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারন করা হয় ৬১ লাখ নয় হাজার ৫৮২ টাকা। কাজটির ওয়ার্কঅর্ডার দেওয়া হয় গতবছর ২৫ জুলাই। যা শেষ করতে হবে ২০ এপ্রিলের মধ্যে। অভিযোগ রয়েছে নি¤œমানের সামগ্রি দিয়ে এ ভবনটি নির্মান করা হচ্ছে। এছাড়াও ছাদ এবং সিড়ি ঢালাই দেওয়া হলেও সঠিকভাবে পানি বেঁধে না রাখায়(কিউরিং) ইতিমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। কাজের শুরুতেই নি¤œমানের উপকরন ব্যবহারের অভিযোগে এলাকাবাসী ইতিপূর্বে কয়েকবার কাজ বন্ধ করে দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ নি¤œমানের উপকরন উঠিয়ে নিয়ে আসেন। কিছু দিন যেতে না যেতেই আবারও নি¤œমানের উপকরন ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকাবাসী সোমবার কাজটি বন্ধ করে দেন। অভিভাবক সদস্য ইকবাল হোসেন জানান, নি¤œমানের উপকরন দিয়ে নির্মানের প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের ঘনিষ্টজন ফয়জুল ইসলাম তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। একই অভিযোগ করেন সহসভাপতি শফিউর রহমান ও তার বাবা মুদি দোকানী মুনছুর বিশ্বাস। স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি দিলিপ কুমার সিংহ জানান, বার বার নিষেধ করা হলেও ঠিকাদারের লোকজন কোন কর্নপাত না করেনি। ইউপি সদস্য রেজাউল করিম, দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান জানান, নি¤œমানের সামগ্রি দিয়ে কাজ করার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় ঠিকাদার ফয়জুল ইসলাম তাদের সাথেও দূর্ব্যবহার করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রানী সরকার এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম খলিল অভিযোগ করেন, মূল ঠিকাদার মেসার্স যমুনা প্রকৌশলী হলেও প্রকৃতপক্ষে কাজটি করাচ্ছেন অপর ঠিকাদার ফয়জুল ইসলাম। তাদের অভিযোগ নি¤œমানের উপকরন দিয়ে নির্মানকাজ করায় ইতিমধ্যে ছাদ এবং সিড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে সোমবার দুপুরে কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে নি¤œমানের উপকরন ব্যবহার ও প্রতিবাদকারীদের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলভবনের সামনে ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সুধিজনেরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ ব্যাপারে কথা হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মৈসার্স যমুনা প্রকৌশলের মালিক মনির হোসেনের সাথে। তিনি জানান, তার লাইসেন্সে কাজটি হলেও প্রকৃতপক্ষে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় ঠিকাদার ফয়জুল ইসলাম। মনির হোসেন জানান, নি¤œমানের উপকরন ব্যবহার এবং প্রতিবাদকারীদের হুমকির বিষয়টি তিনি খোজখবর নিয়ে দেখবেন। তবে এ ব্যাপাওে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ফয়জুল ইসলাম জানান, কোন অবস্থাতেই তিনি নি¤œমানের উপকরন ব্যবহার করছেননা। তবে সিরাজুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, কাজটি তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী গাউসুল আযমকে কাজের সাইটে কোনদিন তারা দেখতে পাননি। গাউসুল আযম এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি এ ব্যাপারে সরেজমিন গিয়ে ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক জানান, তার কাছে এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, তদন্ত করে যথযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: