অবহেলা অযত্নে পড়ে থাকা শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল পরিস্কার কাজে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংবাদ কর্মী

নিজস্ব প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৪ ২২:০৬

নিজস্ব প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২৪ ২২:০৬

ছবি- মণিরামপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

অযত্ন-অবহেলায় প্রায় সারা বছরই অরক্ষিত থাকে মণিরামপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনারটি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনানের যথাযথ মর্যাদা, পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষার বিষয়টি হানি হচ্ছে বলেও তাদের অভিযোগ। ময়লা আবর্জনা গাছের পাতা ও আগাছাই পরিপূর্ণ থাকে এই শহীদ মিনার। তবে সারা বছর ঐতিহ্যবাহী এ শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি বেহাল অবস্থায় থাকলেও ২১ ফেব্রুয়ারিতে ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে এবং জাতীয় শোকদিবস দিবস গুলোতে ফুল দেয়ার উদ্দেশ্যে কিছুটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই আবার বেহাল হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে মণিরামপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল একটি দাবি তোলেন শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কারণ ইতিপূর্বে সোশাল মিডিয়া ফেসবুকে সংবাদ কর্মী মোঃ শাহ্ জালাল "অবহেলা অযত্নে পড়ে আছে মনিরামপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি। একই চিত্র বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি'টিতে। সংরক্ষণ করে রাখার দাবি এলাকাবাসীর" শিরোনামে একটি ভিডিও প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসন কে অনুরোধ করেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও টনক নড়েনি উপজেলা প্রশাসনের। ফলে সংবাদ কর্মী নিজে অবশেষে মনিরামপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল পরিস্কারের কাজ শুরু করেন তার সাথে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বারবান নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এস এম হাফিজুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সঞ্জয় ৭ বছরের ছোট্ট মেয়ে সেজ্যোতি ইসলাম সিনথিয়া।

মূলত মণিরামপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল'টি মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনেই অবস্থিত। বছরের অধিকাংশ সময় লক্ষ করলে দেখা যায় শহীদ মিনারের মূল বেদিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে নোংরা ময়লা-আবর্জনা, সিগারেটের প্যাকেটসহ অসংখ্য উচ্ছিষ্ট অংশ। আর আগাছা, ময়লা-আবর্জনায় ভরে থাকে চারপাশ। আর বেষ্টনি ও সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো না থাকায় অনেকে আবার ভুলে রাতে শহীদ মিনারের গায়ে প্রস্রাবের জন্য বসে পড়ে। হরহামেশাই শহীদ মিনারের মূল বেদিতে জুতা-সেন্ডেল নিয়ে ধূমপান করে মানুষ। তাছাড়া শহীদ মিনারে জুতা নিয়েই ভবঘুরে ঘোরাফেরা বা অবস্থান।

শহীদ মিনারের মূল বেদিতে মিটিং, মিছিল ও ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এবং প্রতি বছর ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বারবার নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়তো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, ঊনসত্তরের গণআন্দোলন হতো না। আর এই সব আন্দলোন হয়েছে তার সব আন্দোলনের সূচনা হল ভাষা আন্দোলন। তবে শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এর আসল মর্যাদাই নতুন প্রজন্মসহ আমরা আজ ভুলতে বসেছি। তাই শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল রক্ষণাবেক্ষণের পুরো দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন প্রজেন্মর কাছে শহীদ মিনারের মর্যাদা ও গুরুত্ব তুলে ধরা এবং প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের বিষয়ে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা উচিত। কারণ শহীদ মিনার হল ভাষা সৈনিকদের স্মৃতিস্তম্ভ। আর বঙ্গবন্ধু হলো এদেশের স্বাধীনতার মহা নায়ক ফলে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল টিকে দেখভাল করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। নিজ দায়িত্ববোধ থেকে ও আমি আমার প্রিয় ছাত্র সংবাদ কর্মী শাহ্ জালাল এর একটা ভিডিও দেখে তাঁর আহবানে শহীদ মিনারটি ও ম্যুলারটি পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করার কাজে আসছি।

এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণেই এ শহীদ মিনার ও জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর স্মরণে ম্যুলার যদি এর যথাযথ মর্যাদা রক্ষা না হয় তাহলে এ দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অপমান করা হয়। ফলে শহীদ মিনারটি ও ম্যুলারটি পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত বলে মনে করি




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: