মনিরামপুরের এসিল্যান্ড হঠাৎ বদলি; মাত্র তিন মাসেই পরিবর্তন করে দিয়ে গেলেন মনিরামপুরের অনেক চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫২

ছবি সমসাময়িক
  মোঃ শাহ্ জালাল।। দালাল ও হয়রানীমূক্ত সেবাদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন মণিরামপুরের সাবেক এসিল্যান্ড খোরশেদ আলম চৌধুরী। মাঠপর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা আরও জনবান্ধব এবং ডিজিটাল ভূমি সেবা বাস্তবায়ন করতে সরকারের ভূমি সেবা সহজীকরণে কাজ করে চলেছিলেন অবিরাম। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকডাউন ও মণিরামপুর একের পর এক সহকারী কমিশনার (ভূমি) রদবদল হওয়ার ভূমি সংক্রান্ত কাজের বিপাকে পড়ে এই জনপদের সাধারণ মানুষ। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ভূমি সংক্রান্ত কাজের সমস্যার সম্মুখীন অপরদিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা হিসেবে মনিরামপুর ইউএনও’র দাপ্তরিক কাজের ব্যস্ততার মাঝে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিসে পর্যাপ্ত সময় দেয়া সম্ভব ছিলো না। ফলে জনগণ যথাসময়ে তাদের প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। অথচ স্বচ্ছ, দক্ষ, সহজীকরণ, ডিজিটাল ভূমি ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভিশন। অবশেষে গত ১৩ আগষ্ট নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট খোরশেদ আলম চৌধুরী সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মণিরামপুরে যোগদান করায় আশার আলো দেখতে পান এই জনপদের ভুক্তভোগী জনসাধারণ। নবনিযুক্ত এসিল্যান্ড খোরশেদ আলম চৌধুরী যোগদান করেই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বাংলাদেশ সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে ডিজিটাল ভূমি সেবা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও হয়রানিমুক্ত ভূমি সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অফিস পরির্দশন করেন এবং বহু পেন্ডিং মিস কেস সমস্যার সমাধান দেন তিনি। এসময় তিনি অফিসের কাজ মনিটরিং এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমি অফিস উন্নয়নে কাজের সার্বিক বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের সাথে পরামর্শ করেন। পাশাপাশি অফিস পরিদর্শনের সময় দৃশ্যমান স্থানে সিটিজেন চার্টার স্থাপনসহ ভূমির সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানসহ সকাল ৯ টায় ইউনিয়ন পর্যায় ভূমি অফিসে নিযুক্ত সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। চলতি মাসের ০২ তারিখ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এসিল্যান্ড অফিসে স্বল্প সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র যা খোরশেদ আলম চৌধুরী নতুন জয়েন্ট করেই মাত্র তিন মাসেই করেছেন। ভূমি অফিসে ৮টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অফিস নিয়ন্ত্রণ, আইপিএস স্থাপনে ৫টি ফ্যান ৬টি লাইন, ১৭ ইউনিয়নের ভূমি অফিসে সিটিজেন চার্টার স্থাপন, ওয়াইফাই স্থাপনের মাধ্যমে অনলাইনে সেবা প্রদান। কর্মচারিদের পরিচয় সংক্রান্ত ব্যানার স্থাপন। গোলঘরের ছাইনি। এবং নো মাস্ক নো সার্ভিস ৪ টি ব্যানার স্থাপন সহ মণিরামপুর যোগদান করেই ইতিমধ্যে গত ১৯ আগষ্ট মনিরামপুর টু চুকনগর রোডে যাত্রীবাহী বাসে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন, মনিরামপুর এর পক্ষে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা। এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে যে সমস্ত যাত্রীবাহী পরিবহন সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে অতিরিক্ত যাত্রীবহন করছে তাদের কে জরিমানা। বাল্যবিবাহ বন্ধ, সিনেমা হল ও পার্কের অনৈতিক কাজকর্ম বন্ধে দণ্ড প্রদান। এছাড়াও একাধিক ভেজাল বিরোধী অভিযানে উপর্যুক্ত অপরাধের কারণে দণ্ডবিধি বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী অর্থদণ্ড প্রদান করেন তিনি । করোনা ভাইরাস প্রতিরোধসহ সকল অনিয়ম ও ভেজালের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রেখেই কাজ করছিলেন তিনি। উল্লেখযোগ্য খেদাপাড়া বাজারে অবৈধভাবে নির্মিত দোকানের কাজ বন্ধের পাশাপাশি স্বচ্ছ, জবাবদিহিতাপূর্ণ ও হয়রানি মুক্ত ভূমি সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমি অফিস পরিদর্শনের সময় রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র ও নথি আপডটে করার জন্য বার বার তাগিদ দিতেন তিনি। এবং ভূমি অফিস সকল প্রকার দালাল, হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত সেবাদানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। এরিমধ্য নবাগত এসিল্যান্ড মনিরামপুর যোগদানের মাত্র তিন মাস যেতে না যেতেই তাকে হঠাৎ বদলি করা হয়েছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলাতে। ফলে আবারো বিপাকে পড়ার হতাশা প্রকাশ করছে এই জনপদের মানুষ। মনিরামপুর ছেড়ে ২৪ নভেম্বর তিনি তালা উপজেলার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানাযায়। তবে হঠাৎ কেন এই বদলি তার বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাননি এসিল্যান্ড খোরশেদ আলম চৌধুরী। তবে বিশেষ সূত্রে জানাযায় বিভিন্ন দূর্নীতি ও ভেজাল বিরোধী অভিযানের সময় উপর মহলের কথা মতো চলতে না পারায় এই বদলি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: