মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা বাওড় আজ দর্শনীয় স্থান হিসাবে বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:২৫

ছবি সমসাময়িক
  মোঃ শাহ্ জালাল।। শুরুতে মনিরামপুর উপজেলার দর্শনীয় স্থান ঝাঁপা বাওড়ে যাওয়ার লোকেশন নিয়ে আলোচনা পরে বিস্তারিত। আসুন কিভাবে যাওয়া যায় ঝাঁপা বাওড়ে সড়ক পথে- ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কে যশোর অতিক্রম করে রাজার হাট নামক স্থান হতে সাতক্ষীরা রোডে প্রায় ১৪ কিঃমিঃ মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ । পরিষদ হতে রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ঝাঁপা বাওড় ১০ কি:মি: । যশোর পালবাড়ী থেকে রাজগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হয়ে ২২কিঃমিঃ দক্ষিণে রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ঝাপা বাওড়। খুলনা ও সাতক্ষীর হতে খুলনা-সাতক্ষীরা রোডের চুকনগর নামক স্থান হতে যশোর দিকে ২৬কিঃ মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ। পরিষদ হতে রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ঝাঁপা বাওড় ১০ কি:মি: এখন আসুন কেন ঝাঁপা বাওড় কে দর্শনীয় স্থান হিসাবে ধরা হয়েছে। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ের তৈরী করা হয়েছে দুটি দৃশ্যমান ভাসমান সেতু আর এই সেতু দুটিতে ভীড় জমে থাকে বছরের বার মাস জুড়ে। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেতুতে ভীড় করে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জানা যায়- রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ে প্রায় হাফ কিলোমিটার দৈর্ঘের বাজার সংলগ্ন ঘাটে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ও বাজারের হাফ কিলোমিটার দক্ষিনে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু করছে। ভাসমান সেতু তৈরীর শুরু থেকে স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়া ও দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়ার ব্যপক প্রচার করাই বিশ্বব্যাপী সাড়া জেগে ওঠে। সেতু দুটির মধ্যে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেন তৎকালীন যশোরের জেলা প্রশাসক আবু আওয়াল চৌধুরী। পরের বছর ২০১৮ সালের মাঝের দিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি উদ্বোধন করেন মণিরামপুরের স্হানীয় এমপি। সেই থেকে আলোচনায় মুখপাত্র হয়ে ওঠে এই ভাসমান সেতু দুটির সাথে ঝাঁপা বাওড়। অবশ্য সেতু দুটি তৈরীর আগে এই ঝাঁপা বাওড়ের তেমন একটা পরিচিত ছিলো না। আর তাই দৃশ্যমান এই সেতু দেখতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী পুরুষের ভীড় জমতে থাকে। এক কথায় বলা যায় বছরের প্রতিটা সময়ে সেতুতে রয়েছে দর্শনার্থী। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন নামী দামী লোক এই সেতু পরিদর্শনে। এদিকে দুই ভাসমান সেতুর মাঝখানের ঝাঁপা গ্রামের বাওড় পাড়ে তৈরী করা হয়েছে মিনি পার্ক ও পিকনিক স্পট। সেখানে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, শিশুদের আনন্দ দেবার জন্য রয়েছে হরেক রকমের দোলনা। বড়দের জন্য রয়েছে চরকা ও দোলনা। রয়েছে ভাসমান টি স্টল, পিকনিক স্পটে রয়েছে চটপটি হাউজ, রকমারী কসমেটিক সহ হরেক রকমের প্রসাদনী খাবারের দোকান। এখন শীতের মৌসুমে এ সময় চলে শিক্ষা সফর ও পিকনিক। এখানে শীতের এই মৌসুমে অনেক দুর দুরান্তের বিভিন্ন অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে পিকনিকে আসছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যারা দুরের কোথাও শিক্ষা সফরে যাচ্ছে তারা ফেরার পথে রাত হলেও একবার ঘুরে যাচ্ছে ভাসমান সেতু দুটি। যতদুর জানা গেছে- গত তিন-বছর ধরে ভাসমান সেতু পরিদর্শনে হাইকোটের কয়েকজন বিচারপতি, কয়েকজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা এসেছেন। এসেছেন চলচিত্রের ও বিভিন্ন কৌতুকের শিল্পীরা। দেখতে এসেছেন আইন ও প্রশাসনের অনেক উদ্ধোর্তন কর্মকর্তা। সম্প্রতি দেখা গেছে- যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা সেতুতে সফরে এসে ভুরিভোজ করেছেন। এ ছাড়া প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই ভাসমান সেতুতে পিকনিকে আসছে। তবে এখনোও বিশ্ব করোনাভাইরাসের মহামারী তাই সামাজিক নিরাপত্তা কথা চিন্তা করে ততোটাই জমজমাট আগের মতো না হলেও মোটামুটি দর্শনার্থীদের ভিড় আছে বলা যায়। ভাসমান সেতুর সভাপতি ঝাঁপা গ্রামের মাষ্টার টুটুল ও সাধারন সম্পাদক মাষ্টার আসাদুজামানের কাছে থেকে জানতে পারি- তাদের বাব দাদাদের,৷ আমল থেকে ছেলে- মেয়েদের নৌকায় পারাপারের ভোগান্তি লাঘবের জন্য স্থানীয় কিছু যুব সমাজ নিজেদের অর্থ দিয়ে এই ভাসমান সেতু তৈরী করেছি। কোন ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই স্থানীয় হোল্ডিং মিস্ত্রি দিয়ে সেতু দুটি তৈরী করা। সেতু দুটি তৈরীর পর এত দৃশ্যমান হবে এটা কোন দিন ভাবতে পারেনি এই জনপদের মানুষ। শুধু দেশ নয় সমস্ত বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়েছে এই ভাসমান সেতু দুটি। তাই আমরা মনিরামপুর বাসী ধন্য এই ঝাঁপা বাওড় ও ভাসমান সেতু দুটির কাছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: