যশোর এম এম কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২১ ০৪:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২১ ০৪:১৪

ছবি সমসাময়িক

সাজেদ রহমান।।

যশোর এম এম কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসের ভিতর একটি ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে আন্দোলনের কর্মসূচী গ্রহন করতেন। ওই ছাত্রাবাসের নাম ছিল ‘এলভি মিত্র হল’। যশোরের মানুষ জানেন না এলভি মিত্র কে ছিলেন? তাঁর পুরো নাম ছিল লালবিহারী মিত্র। বাড়ি যশোর সদরের লেবুতলা গ্রামে। যদিও তাদের আদি নিবাস ছিল কলকাতার বরিষা গ্রামে। ওই মিত্র পরিবারের একটি অংশ যশোরের লেবুতলা গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। ১৮৪৬ সালে এলভি মিত্র লেবুতলা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি যশোর জেলা স্কুল, নদীয়ার কৃষ্ণ নগর কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজে পড়ার সময় তিনি রামতনু লাহিড়ী, উমেশচন্দ্র দত্তের প্রিয় ছাত্র হয়ে উঠেন। অর্থের অভাবে লেখাপড়া বেশি দূর এগোয়নি। তিনি এ সময় গৌরনগর হাই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে কলকাতা মেডিকেলে পড়াশোনা করতে গিয়ে তাঁর সাথে পরিচয় হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজেন্দ্র দত্ত, কালীকৃষ্ণ মিত্রের সাথে। তারা তিনজনই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রতি শ্রদ্ধাবান ছিলেন। হোমিওপ্যাথি পাশ করে তিনি গ্রামে ফিরে চিকিৎসা শুরু করেন। পরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরামর্শে তিনি ১৮৭০ সালে কলকাতায় গিয়ে দোকান দিয়ে চিকিৎসা কাজ শুরু করেন। সেই সময় তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সারা ভারতে তার হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারখানা খ্যাতি লাভ করে। এমনকি লর্ড রিপন পর্যন্ত কলকাতায় তার ডাক্তার খানার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তিনি অর্থ না নিয়েও সেই সময় হাজার হাজার মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছেন। ১৯২২ সালের ২৭ আগস্ট, রবিবার বেলা ১০টার দিকে তিনি ৭৭ বছরে তিনি পরলোকগমন করেন। তার একমাত্র পুত্র মণীন্দ্র মিত্র কলকাতা হাইকোর্টের একজন এটর্ণী ছিলেন। ১৯৪১ সালে যশোর কলেজ(পরে নাম হয়েছে মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করা হলে তাঁর নামে একটি হল করা হয়।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: