প্রিয় ক্যাম্পাসের প্রিয় মানুষগুলি আজ কত অচেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৫

ছবি সমসাময়িক
  [gallery ids="1357,1358"] মোঃ শাহ্ জালাল।। জীবনের মধুর সময় হলো ছাত্রজীবন। আর ছাত্রজীবনের সবচেয়ে সেরা সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়টাকে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে অর্জন করে নিতে হয় নিজের কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিট। কারও ঠিকানা হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কারও ঠিকানা হয় প্রাচ্যের কেমব্রিজ খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা সাংস্কৃতিক নগর সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার ঠিকানা হয়েছিল যশোর এম এম কলেজ। ক্যাম্পাসে প্রথম কয়েক দিন ক্লাস করেই তৈরি হয়ে যায় বন্ধুদের এক বিশাল সার্কেল। হঠাৎ করেই কিছু অচেনা অজানা মুখ হয়ে যায় আমার সবচেয়ে আপনজন। ক্লাস শেষ হওয়ার পর আমাদের প্রথম গন্তব্য থাকেতো পুকুর পাড় । পুকুর পাড় ছিল ক্যাম্পাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় আড্ডার জায়গা। এখানে এলে কলেজের প্রায় সব বিভাগের শিক্ষার্থীকে আড্ডা দিতে দেখা যায়। কলেজের প্রাণ বলা যেতে পারে পুকুর পাড়। ক্লাস শেষ করে বন্ধুরা সব দল বেঁধে চলে পুকুর পাড়ের দিকে। পুকুর পাড়ে অচিরেই জমে ওঠে চায়ের কাপে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। সঙ্গে থাকে গিটার আর বন্ধুদের সঙ্গে গলা ফাটিয়ে গান করা। নিমেষেই দূর হয়ে যায় সারা দিনের সব ক্লান্তি, সব বিষণ্নতা। কলেজ ক্যাম্পাসের আরেকটি আড্ডার জায়গা হচ্ছে কলা ভবনের সামনে ভাস্কর্য । আমি ছিলাম বানিজ্য বিভাগের ছাত্র তাই ক্লাস শেষে আমাদের ভবনের সামনের রোড ধরে হাঁটলে একদম দক্ষিণ দিকে ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটির পাশে বিশাল মাঠ প্রায় সময়ই মেতে থাকে বিভিন্ন ব্যান্ড দলের কনসার্টে ও ক্রিকেট খেলায় একদল খেলোয়াড়। যশোর শহরের বিখ্যাত সব ব্যান্ড দল ও কলেজ ক্যাম্পাসের সংগীত শিল্পীরা এখানে আসে পারফর্ম করতে। সেসব কনসার্টে বন্ধুদের কাঁধে কাঁধ রেখে চলে গলা ফাটিয়ে গান করা। এ ছাড়া আড্ডা দেওয়ার জন্য রয়েছে শহীদ মিনার, চারুকলা, যশোর পৌর পার্ক। বন্ধুদের সঙ্গে হই হুল্লোড় করতে করতে কখন যে সময় কেটে যেত তা টেরও পাওয়া যেতনা। ছোট ছোট কিছু টুকরা গল্পে বাঁধা, এলোমেলো কিছু স্মৃতিতে সাজানো থাকে ক্যাম্পাসের দিনগুলো। আর এসব স্মৃতির পুরোটাই জুড়ে থাকে প্রিয় বন্ধুরা। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে আবেগের জায়গা দখল করে রাখে এই প্রিয় বন্ধুরাই। নিজ নিজ বাড়ি থেকে অনেক দূরে বন্ধুরাই একমাত্র ভরসার জায়গা। ক্যাম্পাসের বন্ধুদের সার্কেল অন্য সব সার্কেল থেকে একটু ভিন্ন। এখানে একেকজন দেশের একেক প্রান্ত থেকে উঠে আসে। তাই সার্কেলের মধ্যেও দেখা যায় বৈচিত্র্য। তবে এত বৈচিত্র্য থাকার পরও বন্ধুদের মধ্যে আবেগ ও ভালোবাসার কমতি থাকে না। দেশে -বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকল বন্ধুদের প্রতি রইল আগমনী শীতের শুভেচ্ছা। আর হয়তো সবাইকে একসাথে পাওয়া যাবেনা কর্মব্যাস্ত এই জীবনের ভিড়ে তবুও মন টানে, মনে পড়ে সকলের কথা বারে বারে!"


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: