মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের অবহেলার কারনে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ১৬:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ১৬:০০

ছবি সমসাময়িক
যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের অবহেলার কারনে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে শনিবার দুুপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত সুফিয়া বেগম নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকের দাবি সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। জানাগেছে ওই সময় এ্যাম্বুলেন্স রেখে চালককে নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ নিজের গাড়িতে করে অন্যত্র গিয়েছিলেন। আর এ বিষয়টি জানাজানি হলে রোগির স্বজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। জানাযায়, উপজেলার চান্দুয়া গ্রামের আবদুর রশিদ মোড়লের স্ত্রী সুফিয়া বেগম(৬৫) মনিরামপুর পৌর শহরের মোহনপুর এলাকায় তার মেয়ের বাড়িতে যাবার উদ্দেশ্যে শনিবার সকালে বাড়ি থেকে একা রওনা হন। বেলা ১১ টার দিকে পৌরশহরের মোহনপুর বটতলার পাশে সড়ক পার হওয়ার সময় ইজিবাইকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর জখম হন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী পৌর কাউন্সিলর বাবুল আক্তার জানান, আহত গৃহবধুর মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরন হচ্ছিল। অভিযোগ করা হয়েছে জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডা: সুমন নাগ জানান, রোগির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময় রোগির কোন স্বজন এবং সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের চালক উপস্থিত না থাকায় যশোরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এ দিকে খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে রোগির স্বজনরা প্রাইভেটকার ভাড়া করে আনেন সুফিয়াকে যশোরে নিয়ে যাবার জন্য। এসময় রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিনাঅনুমতিতে হাসপাতালের স্টাফরা অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পৌর কাউন্সিলর বাবুল আকতার জানান, পরবর্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথকে ফোনে অনুরোধ করা হলে তিনি সিলিন্ডার দেওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু হাসপাতালের দোতলা থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে নিচে আসার আগেই গৃহবধুর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনরা সুফিয়া বেগমের লাশ নিয়ে বাড়িতে চলে যান। মোবাইল ফোনে কথা হয় এ্যাম্বুলেন্স চালক একলাস হোসেনের সাথে। তিনি জানান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শুভ্রারানী দেবনাথ সরকার থেকে একটি নতুন গাড়ি বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু চালক না থাকায় তিনি তাকে(একলাস) সাথে নিয়ে ওই নতুন গাড়িতে করে ইপিআই কেন্দ্র পরির্দশন করতে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, রোগিকে চিকিৎসার ব্যাপারে কোনপ্রকার গাফিলতি করা হয়নি। তবে তার সরকারি গাড়ির চালক না থাকায় এ্যাম্বুলেন্সের চালক একলাসকে নিয়ে তিনি ইপিআই টিকা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন। মনিরামপুর থানার ওসি(সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: