খুলনা'র ৩৬ এমপির মধ্যে মনোনয়ন ঝুঁকিতে আছে ১৬ জন

অনলাইন নিউজ ডেস্ক।। | প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৪৪

অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৪৪

ফাইল ফটো

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে হবে বলে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড এবং দলের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেবিলে সংসদ সদস্যদের আমলনামা জমা দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা নিজেই দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা নির্বাচনের আগে ঘোষণা করবেন। তবে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিভাগ ধরে ধরে প্রতিটি আসনের এমপি-মন্ত্রীদের আমলনামা যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। কোন এলাকার কোন এমপি মন্ত্রী আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ঝুঁকিতে রয়েছেন, সেটিও জানা গেছে।

গণভবন ও আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য বিশস্ত সূত্র ভোরের পাতাকে জানিয়েছে, খুূলনা বিভাগের ৩৬ টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১৬ জন বর্তমান সংসদ সদস্য মনোনয়ন ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তাদের মধ্যে জেলা অনুযায়ী হিসাবটাও ভোরের পাতাকে নিশ্চিত করেছে সূত্রটি। জানা গেছে, খুলনা বিভাগে মোট ১০ টি জেলায় ৩৬ টি সংসদীয় আসনে ১৪ দলের জোট থেকে মাত্র ২ জন সংসদ সদস্য আছেন। তারা হচ্ছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ একাংশ)’র সভাপতি সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কুষ্টিয়া ২ আসনের সংসদ সদস্য এবং ওয়ার্কাস পার্টি থেকে নির্বাচিত সাতক্ষীরা ১ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ। তাদের দুজনের মধ্যে একজন চূড়ান্ত পর্যায়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন।

এছাড়া, মেহেরপুর ২ টি আসনের মধ্যে পরিবর্তন বা ঝুঁকির মাত্রা কম বলেও জানা গেছে।

কুষ্টিয়ার ৪ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ঝুঁকিতে রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন, কুষ্টিয়া ১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সারোয়ার জাহান এবং কুষ্টিয়া ৪ আসনের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ।

চুয়াডাঙ্গা ১ এবং ২ আসনে দুইজন এমপিই মনোনয়ন ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছে সূত্রটি। সোলাইমান হক জোয়ার্দার সেলুন এবং মোহাম্মদ আলী আজগরের বিরুদ্ধে দলীয় গ্রুপিয়ের কারণে আওয়ামী লীগে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ থেকে জমি দখল, সংখ্যালঘু নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ঝিনাইদহের ৪ জনের মধ্যে ৩ জন সংসদ সদস্যই ঝুঁকিতে আছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে সংসদীয় আসন ১ এর এমপি মোঃ আব্দুল হাই, ২ এর তাহজীব আলম সিদ্দিকী এবং ৪ এর মোঃ আনোয়ারুল আজীম (আনার)।

যশোরের ৬ টি আসনের মধ্যে মনোনয়ন ঝুঁকিতে থাকা এমপির সংখ্যা তিনজন। তারা হলেন, যশোর ২ আসনের মোঃ নাসির উদ্দীন, যশোর ৪ আসনের রনজিত কুমার রায় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও যশোর ৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য।

মাগুরা ২ টি আসনের মধ্যে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও মাগুরা ২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার।

নড়াইল ১ আসনের এমপি বি এম কবিরুল হক মুক্তিও মনোনয়ন ঝুুঁকিতে আছেন বলে জানা গেছে।

বাগেরহাটের ৪টি আসনের মধ্যে মাত্র ১টি আসনে মনোনয়ন ঝুুঁকিতে রয়েছেন বাগেরহাট ৪ আসনে উপ নির্বাচনে জয়ী হওয়া আমিরুল আলম মিলন। এছাড়া খুলনার ৬ টি আসনের মধ্যে মাত্র ১ জন সংসদ সদস্য মনোনয়ন ঝুঁকিতে রয়েছেন। তিনি হলেন খুলনা ৬ আসনে সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান।

সাতক্ষীরা থেকে ২টি আসনের সংসদ সদস্য মনোনয়ন ঝুঁকিতে রয়েছেন। তারা হলেন, সাতক্ষীরা ১ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার।

সূত্রটির কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন তারা মনোনয়ন ঝুঁকিতে রয়েছেন? জবাবে সূত্রটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়ন সাধনের পাশাপাশি মানুষের আস্থা অর্জন করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। কিন্তু অনেক এমপি ও তাদের স্বজনরা বেপোরোয়া আচরণ করেছেন, জনগণের পরিপূর্ণ আস্থা অর্জন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন বলেই ঝুঁকিতে আছেন। পাশাপাশি তারা নিজ দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল তৈরি করে দলের সম্মানহানি থেকে শুরু করে দলের মধ্যে অনেক সময় অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন স্বাধীনতা বিরোধীদের। এসব দিক বিবেচনায় নিয়েই তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন, এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে যারা বিতর্কিত তারা বাদ পরবেন। নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে ক্লিন ইমেজের জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পারেন, তাদেরকেই মনো্নয়ন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বড় ধরণের পরিবর্তন দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

নিউজ সংগ্রহ- ভোরের পাতা।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: