মাগুরা-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ নেতা

রাশেদ রেজা মাগুরা থেকে | প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩ ০৫:৩৮

রাশেদ রেজা মাগুরা থেকে
প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩ ০৫:৩৮

ছবি- সমসাময়িক ফটো।

মহম্মদপুর, শালিখা ও মাগুরা সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত মাগুরা-২ নির্বাচনী আসন। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৫০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮১৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের তিনজন ভোটার রয়েছে এই আসনে। এই আসনটি আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ঘাঁটি।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৬/৭ মাস বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে ব্যাপক নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়েছে মাগুরা-২ নির্বাচনী আসনে। দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় ঘনঘন যাতায়াত করছেন। নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন সভা-সমাবেশ, কর্মিসভা কিংবা উঠান বৈঠকে। এই সংসদীয় আসনটি আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই আসনটি রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মাঠের কাজ করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন গুরুপ্তপূর্ণ প্রার্থী।

এই আসনে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার এমপি, সদ্য ঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. ওহিদুর রহমান টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুজ্জামান বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো: নুরুজ্জামান, এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেদ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক বাবু নির্মল চ্যাটার্জী।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতিক প্রত্যাশী এই নেতাগুলো ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।

এই আসন থেকে মোট চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার। চারবার সংসদ সদস্য এবং পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন এলাকার ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে রয়েছে তার বিশাল অবদান। বহু আগে থেকেই তিনি নির্বাচনী এলাকায় নিয়মিত সভা-সমাবেশসহ ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। নির্বাচনী এলাকায় তার একটা শক্ত অবস্থান রয়েছে ।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কোন ব্রিজ নির্মাণ বাকি নেই। প্রায় সব সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার জন্য আড়পাড়ায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। বেকারদের কর্মসংসস্থানের জন্য কাজ করা হচ্ছে।
মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ১৯৯৪ সালের উপ-নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। সেই নির্বাচনে বিএনপির নজিরবিহীন ভোট কারচুপি সংঘটিত করেছিল। তার বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট আছাদুজ্জামান মাগুরা-২ আসন থেকে চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন । শফিকুজ্জামান বাচ্চু বলেন, আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইব। দল যদি মনোনয়ন দেয় তবে নির্বাচন করব। আর দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. ওহিদুর রহমান টিপুও মনোনয়নপ্রত্যাশী। সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট ড. ওহিদুর রহমান টিপু যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দুতাবাসের সাবেক কুটনীতিক। তিনিও মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা করছেন। তিনি নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ করছেন। অংশ নিচ্ছেন সভা-সমাবেশে ।
অ্যাডভোকেট ড. ওহিদুর রহমান টিপু বলেন, আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইব। নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন ও বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। সব সময় জনগণের সঙ্গে থাকব।

এদিকে অধ্যাপক কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দিন মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষা জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি। পরবর্তীতে প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সাবেক পরিচালক, সদর দপ্তর ও বঙ্গভবন ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্ণেল জিএস ছিলাম। রাজধানীর সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেছি। জাতীয় পর্যায়ে দুইবার ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনবারের শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হই। বর্তমানে জামালপুরে অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের সুবাদে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সামান্যতম হলেও আস্থা অর্জণ করতে পেরেছি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেদ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক বাবু নির্মল চ্যাটার্জী দাবি করে বলেন, দল যদি মনোনয়ন দেয় তবে তিনি এই আসনে নির্বাচন করবেন। সে লক্ষ্যে এলাকায় গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়াও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো: নুরুজ্জামান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তিনি আজীবন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করছেন। চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে এখন তিনি অলস সময় কাটাচ্ছেন। বাকি জীবন তিনি বৃহত্তর পরিসরে এলাকার মানুষর কল্যাণে কাজ করতে চান। আর সেজন্যই তিনি মাগুরা -২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: