দেশের উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৩

ছবি সমসাময়িক
  বিশেষ প্রতিনিধি।। নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের বেতন-ভাতা ও আর্থিক সুবিধাও নির্ধারণ করাও হচ্ছে । ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালা, ২০১০’ শিরোনামে বিধিমালার অনুমোদন নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পাস হওয়ার পর থেকে সকল দায়িত্ব ও কর্তব্য পাচ্ছেন তারা। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব: চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ করবেন। তিনি পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করবেন, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবেন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধান করবেন। পরিষদে ন্যস্ত করা বা প্রেষণে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বার্ষিক কাজকর্মের অগ্রগতি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেবেন। তবে বার্ষিক গোপন প্রতিবেদন (এসিআর) চেয়ারম্যান দেবেন না। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অধস্তনের গোপন প্রতিবেদন দেবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শৃঙ্খলাবহির্ভূত কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়ারম্যান লিখতে পারবেন। তবে পরিষদের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ এবং প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। পরিষদের বিভিন্ন কার্যাবলি-সংক্রান্ত প্রস্তাব এবং প্রকল্প পরিষদের পক্ষে প্রস্তুত করতে পদক্ষেপ নেবেন চেয়ারম্যান। উপজেলা-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করবেন। পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন ব্যবসা, বৃত্তি ও পেশার ওপর পরিষদ কর্তৃক প্রদেয় লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যু করবেন। সরকার কর্তৃক সময় সময় অর্পিত সব বা যেকোনো কাজ সম্পাদন করবেন। এ ছাড়া বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও ভাইস চেয়ারম্যানদের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব তদারক ও নজরদারি করবেন। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব: পরিষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে এক বা একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। প্যানেলের অগ্রাধিকার অনুসারে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মাধ্যমিক শিক্ষা ও মাদ্রাসাশিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম তদারক করবেন। আন্তইউনিয়ন সংযোগকারী রাস্তা নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, চুরি-ডাকাতি, চোরাচালান, মাদকদ্রব্য ব্যবহার ইত্যাদি অপরাধের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টিসহ প্রতিরোধমূলক কাজ করবেন। পরিবেশ সংরক্ষণ ও সামাজিক বনায়নসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব: পরিষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে এক বা একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। প্যানেলের অগ্রাধিকার অনুসারে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা ও মাতৃমঙ্গল সেবা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা নেবেন। স্যানিটেশন ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নতি সাধন এবং সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেবেন। মহিলা ও শিশুদের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে করণীয় ব্যবস্থা চিহ্নিতকরণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া ও বাস্তবায়ন করা, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প স্থাপন ও বিকাশে উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া এবং নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক ও বাল্যবিবাহ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদিও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আর্থিক সুবিধা: চেয়ারম্যান মাসিক ১০ হাজার ও ভাইস চেয়ারম্যান সাড়ে সাত হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পাবেন। তবে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত থাকলে তিনি ওই সময়ে সম্মানী ভাতা তুলতে পারবেন না। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলে বা বেকসুর খালাস পেলে সমুদয় অর্থ পাবেন। এ ছাড়া চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সরকারের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার জন্য প্রযোজ্য বিধিবিধান অনুসারে সরকার-নির্ধারিত হারে ভ্রমণ-ভাতা পাবেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী চেয়ারম্যান দায়িত্ব-ভাতা হিসেবে প্রথম ছয় মাসের জন্য মাসিক এক হাজার টাকা করে এবং পরবর্তী সময়ের জন্য মাসিক পাঁচ শ টাকা হারে কার্যভার-ভাতা পাবেন। তবে দায়িত্বকাল এক মাসের অধিক না হলে কার্যভার-ভাতা প্রাপ্য হবেন না।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: